৮৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের আবেদন শুনে হতভম্ব হয়ে গেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি। এই বয়সে বিয়ে? কিন্তু ছয় ছেলেমেয়ের বাবা কোনও বাধা মানতে নারাজ! নতুন করে সংসার তিনি পাতবেনই। কারণ সম্পত্তির জন্য তাঁর ছেলেমেয়েরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন।
এছাড়াও বিয়েতে পুলিশও বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনিলকুমার পাল নামে ওই বৃদ্ধ।
ভারতের হুগলির জিরাটের বাসিন্দা অনিল পেশায় হুগলি জেলা আদালতের আইনজীবী। তবে তার আবেদন শুনে গতকাল সোমবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, এই বয়সে বিয়ে? বৃদ্ধের মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন।
তবে আদালত এই আবেদনে কোনও হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি। অনিলকে প্রয়োজনে নিম্ন আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিচারপতি এই মামলাটি নিষ্পত্তি করেছেন।
গত ৯ এপ্রিল বিয়ে করতে চেয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন অনিল। বিজ্ঞাপনে তিনি জানিয়েছিলেন, পাত্রী ষাটোর্ধ্ব হবেন। পেশায় আইনজীবী হলে ভাল। অনিলের কথায়, কয়েকজন যোগাযোগও করেছেন তার সঙ্গে। কিন্তু জানতে পেরে বেঁকে বসেছেন ছেলেমেয়েরা। তার ছেলেমেয়েরা সবাই বিবাহিত।
অনিলের অভিযোগ, এই বিয়ে আটকাতে তার উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। গত ১ মে তিনি বলাগড় থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টে তাকে মানসিক চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছে। তাই তিনি হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
অনিল বলেন, জিরাটে তার বসতবাড়ির সঙ্গে লাগোয়া দু’টি মন্দির রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অনেকটা চাষের জমি। এই সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখিয়ে নিতে বেশ কয়েকবছর ধরে ছেলেরা চাপ দিচ্ছে। এই বয়সে দেখাশোনা করার কেউ নেই। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি জানান, তার বড় ছেলে সেনাবাহিনীতে ছিলেন। সম্প্রতি অবসর নিয়ে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন। মেজো ছেলের বড় ব্যবসা রয়েছে। আর ছোট ছেলে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে। তিনি বাড়িতেই থাকেন। কিন্তু ছেলেরা সবাই সম্পত্তির জন্য তার উপর অত্যাচার চালাচ্ছেন।
বৃদ্ধের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, পুলিশ তাকে হেনস্থা করছে। মানসিক চিকিৎসা করাতে বলছে। এটা ঠিক নয়। তা শুনে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘পুলিশ আদালতের কথাই বলেছে।’’
সূত্র: এবেলা
Discussion about this post