নিজস্ব প্রতিবেদক: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আপিলের শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার আপিল আবেদনটির বিষয়ে অবহিত করেন আইনজীবী অ্যাড. জয়নুল আবেদীন। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। এছাড়াও ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ তথ্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি নিশ্চিত করেন খালেদা জিয়ার আপিলের নম্বর হচ্ছে ‘ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮।’ ১২২৩ পৃষ্ঠার আপিল আবেদনে ২৫ টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। এসব যুক্তিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে খালাসের আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আপিলের ফাইলিং আইনজীবী হলেন দুদক আইনজ্ঞ অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান।
এর আগে খালেদা জিয়ার আপিল ও জামিনের বিষয়ে তার প্যানেল আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতি ভবনে কয়েক দফা জরুরি বৈঠক করেন ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০৯ ও ১০৯ ধারার অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় রায় ঘোষণা করেন আদালত। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
প্রস্তুত হচ্ছে আপিলের নথি
ওই রায়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অপর আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানাও করা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলসহ তিনটি পৃথক আবেদন করার বিষয়ে ভাবছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এ নিয়ে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘প্রথমে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করবো। দ্বিতীয়ত, আপিল গ্রহণের পর জামিন আবেদন করবো। তৃতীয়ত, নিম্ন আদালতের সাজা স্থগিত চেয়ে আবেদন করবো।’
উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত হলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণে বাধা আইনত বাধা থাকবে না বলেও জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী।
উল্লেখ্য,জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট-সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ এছাড়া, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে দুদক খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
Discussion about this post