রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডে মদ্যপ অবস্থায় গুলি করে দুই শ্রমজীবীকে হত্যার অভিযোগে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রিমান্ডে অসুস্থ্যতার ‘ভান’ করায় রনিকে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রনি হত্যার কথা স্বীকার করে নমনীয় হননি। বরং নিজে এমপির ছেলে হওয়ায় কিছুই হবে না বলেই দাবি করছেন।
এদিকে ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে রনির ব্যক্তিগত জীবন ও চলাফেরার অনেক তথ্য পেয়েছে ডিবি পুলিশ। বদমেজাজি রনি সব সময় সামান্য কিছুতেই রেগে যান। প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার এমন আচরণের শিকার হয়েছেন অনেকেই, কেউই প্রতিকার পাননি। বেশি পরিমাণে মদপান করে মদ্যপ অবস্থায় ঘুরে বেড়ানো ছিল তার নিয়মিত অভ্যাস। রনির চলাফেরাও ছিল উশৃঙ্খল বন্ধুদের সঙ্গেই। তার বন্ধুরা চেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির সঙ্গেও জড়িত। তবে জোড়া খুনে অভিযুক্ত রনির বিরুদ্ধে আগের কোনো মামলার তথ্য এখনো পায়নি ডিবি।
হত্যাকাণ্ডের রাতে রনির সঙ্গে থাকা তিন বন্ধুর মধ্যে দুই বন্ধু টাইগার কামাল ও জাহাঙ্গীরের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরও খুঁজছে ডিবি পুলিশ।
গত ১৩ এপ্রিল রাতে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি থেকে গুলি ছোড়েন সাংসদ পিনু খানের ছেলে রনি। তার ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হয়ে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সিএনজি অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী এবং মধুবাগের রিকশাচালক আব্দুল হাকিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনার তদন্তে নেমে ডিবি পুলিশ গত ৩১ মে রনি ও তার গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেপ্তার করে। ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
তবে ‘অস্থতার’ কারণে প্রথমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি রনিকে। ‘সুস্থ’ হলে গত মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। বৃহস্পতিবার ছিল রনির রিমান্ডের তৃতীয় দিন। অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে রনিকে।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি প্রথমে তেমন অসুস্থ ছিলেন না। অনেকটাই ‘ভান’ ছিল। এবারও অসুস্থতার ভাব দেখাচ্ছেন। আবার বলছেন- ‘আমি এমপির ছেলে। এই ঘটনায় কিছুই হবে না।’ পরোক্ষভাবে হলেও আমাদের ওপর চাপ আছে। তাই আমরা সাবধানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। ইমরানের জবানবন্দী এবং আলামতের প্রমাণে আমরা চার্জশিট দিতে পারবো। তিনি স্বীকারোক্তি না দিলেও তেমন সমস্য নেই।’
ওই কর্মকর্তা জানান, রনির ব্যাপারে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে বড় ধরনের রেকর্ড নেই। তবে যুবলীগের মাঝারি ধরনের কয়েকজন নেতাকর্মী তার বন্ধু। তারা চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজিতে জড়িত। রনিও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে জড়িত। গত ১৩ এপ্রিল রাতে দুই স্থানে মদের আড্ডায় অংশ নেয়ার পর রনির গাড়িতে চড়েন তিনজন। তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর এবং টাইগার কামালের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তারা দুজনই যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
১৩ মে রাতে বাংলামটরের ‘শ্যালে’ বারে যান তারা। এরপর হোটেল সোনারগাঁওয়ে যান। সেখান থেকে রনি তার গাড়িতে করে মগবাজারে নামিয়ে দেন জাহাঙ্গীরকে। এরপর গাড়ি ঘুরিয়ে বাংলামটর হয়ে হাতিরপুলে যান। এ সময় রাত ১টা ৪৩ মিনিটে যানজটে পড়ে গুলি ছোড়েন রনি। তখন তিনি চালকের পাশের আসনে বসে ছিলেন। আর পেছনের আসনে ছিলেন টাইগার কামাল। এরপর হাতিরপুলের বাসার সামনে কামালকে নামিয়ে দিয়ে বাসায় যান রনি।
বেসামাল চলতেন রনি:
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগে বড় ধরনের অপরাধ না ঘটালেও অতিরিক্ত পরিমাণে মদপান করে মাতাল হয়ে চলাচল করা রনির অভ্যাস। তিনি প্রায় নিয়মিত বারে যেতেন। ঘটনার রাতে তিনি অতিরিক্ত পরিমাণে হুইস্কি ও বিয়ার সেবন করেন। তার বদমেজাজ বলে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতেন। এভাবে অনেকের সঙ্গেই অসধাচরণ করেছেন। প্রায়ই মদ্যাপ অবস্থায় লোকজনকে মারধর করতেন। তবে মা সরকারদলীয় নেত্রী হওয়ায় অনেক সময়ই পার পেয়ে গেছেন রনি। শেষ পর্যন্ত জোড়া খুনের ঘটনা ঘটালেন।
দোহার নবাবগঞ্জের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনির দুই স্ত্রী। তার বেপরোয়া জীবনের কারণে এক স্ত্রী অন্যের হাত ধরে চলে গেছেন। তার সঙ্গে ‘যাত্রাগানের’ লোকদের ওঠাবসা। তার পরিবারের কোনো এক সদস্য যাত্রাপালার সঙ্গে জড়িত ছিল। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় রনি স্ত্রীকে নিয়ে ধানমণ্ডির ৪ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়িতে থাকেন। তার মা এমপি পিনু খান পরিবার নিয়ে নাখালপাড়ার এমপি হোস্টেলে থাকেন। তদন্তকারীরা রনির অতীত জীবনের অপরাধ খতিয়ে দেখছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রনির বন্ধু টাইগার কামাল ও জাহাঙ্গীরও উশৃঙ্খল বলে জানা গেছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাই তাদের খোঁজা হচ্ছে।’
পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়েন রনি:
চালক ইমরানের স্বীকারোক্তি এবং তদন্তে জানা গেছে, পকেটে থাকা ৭ পয়েন্ট ৬৫ মডেলের পিস্তল দিয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়েন রনি। এর দু’টি গুলি রিকশাচালক ও সিএনজি চালকের শরীরে বিদ্ধ হয়। ফ্লাইওভারের কাজ চলার কারণে একদিকের রাস্তা বন্ধ ছিল। ফলে গভীর রাতে রাস্তায় কিছুটা যানজট লাগে। এই সামান্য কারণে হঠাৎই রেগে যান রনি। গাড়ির জানালার কাঁচ নামিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকেন। এরপর পকেট থেকে লোড করা পিস্তল বের করে গুলি ছোড়েন। গুলি করার পরও উত্তেজিত ছিলেন তিনি। এরপর স্বাভাবিক হয়ে বাসায় ফিরেন।
গুলিতে সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন, কেউ মারা যেতে পারেন- এমন কোনো অনুভূতি বা ভাব ছিল না রনির মধ্যে, বিষয়টি নিয়ে পরেও উদ্বিগ্ন হননি। তিনি দুইদিন পর একজনের মৃত্যুর খবর পান। পরে ২৩ এপ্রিল আরেকজন মারা যাওয়ার খবরও পেয়েছেন। তবে এসব কিছুই পাত্তা দেননি রনি। তিনি ভেবেছেন কেউ রনিকে শনাক্ত করতে পারবেন না। পারলেও ক্ষমতার কারণে তিনি গ্রেপ্তার হবেন না।
চালক ইমরান গ্রেপ্তার হওয়ার পরই রনির নাম প্রকাশ করে। আর তাতেই ধরা পড়েন রনি। ইমরান স্বীকারোক্তি দিলেও ঘটনায় তিনি ছিলেন নিরপরাধ স্বাক্ষী। তিনি দাবি করেন, কিছু বোঝার আগেই রনি গুলি করে দেন। ফলে রনিকে থামানো যায়নি।
ইমরানের অপরাধ ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা, ডিবির উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস বলেন, ‘মূলত ইমরান অপরাধী নয়। সে যেহেতু ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে, সেভাবেই আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দেবো। ওর সাজা না হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
জানা গেছে, চালক ইমরান ফকিরের বাড়ি ফরিদপুরে। মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন।
যেভাবে রহস্য উদ্ঘাটন:
গত ১৩ এপ্রিল রাতে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডে ‘দুর্বৃত্তের’ গুলিতে বিদ্ধ হন সিএনজি অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আব্দুল হাকিম। এর মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল রিকশাচালক আব্দুল হাকিম ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই দিনই তার মাকে বাদী করে রমনা থানায় একটি মামলা নেয় পুলিশ। পরে ২৩ এপ্রিল একই হাসপাতালে ইয়কুব আলীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনাও মৃত্যুকে এই হত্যা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২৪ মে মামলাটির তদন্তভার ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
থানা পুলিশ প্রথমে ঘটনাটিকে ছিনতাই বলে ধারণা করলেও বেপরোয়া গুলি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য পায় ডিবি। এরপর তদন্তে নেমে বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করে তারা।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনাস্থলের কাছে ট্রপিক্যাল হোমসের একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছিল। সেখানে চাঁদাবাজি বা গণ্ডোগোল হয়েছে কি না যাচাই করে ডিবি পুলিশ। ঘটনার সময় রাত ১টা ৪৩ মিনিটের দিকে রাস্তায় তেমন লোকজন ছিল না। একজন তরমুজ বিক্রেতাসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্যে নিশ্চিত হওয়া যায়, কোনো সংঘাতে গুলির ঘটনাটি ঘটেনি। প্রথমে ধারণা পাওয়া যায়, মাইক্রোবাস থেকে গুলি করা হয়। ওই এলাকা দিয়ে চার-পাঁচটি গাড়ি ঘটনার সময় চলাচল করে। এর মধ্যে কালো রঙের প্রাডো গাড়িটিকে সন্দেহের আওতায় আনে তদন্তকারীরা।
এরপর পাশের জনকণ্ঠ ভবন থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। এতে ঘটনাটি পুরোপুরি না বোঝা গেলেও প্রাডো গাড়ি থেকে গুলির ঘটনাটি নিশ্চিত হয় ডিবি পুলিশ। এরপর রনির কালো রঙের গাড়িটি (ঢাকা মেট্টো ঘ: ১৩-৬২৩৯) শনাক্ত করা হয়। গত ৩১ মে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৪ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির রনির বাসার সামনে থেকে রনির গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। রনি পরিবার নিয়ে ওই বাসায় থাকেন।
গ্রেপ্তারের পরই ইমরান ঘটনাটি স্বীকার করেন। এরপর রনিকেও গ্রেপ্তার করে ডিবি। রনির পিস্তল এবং ২১ রাউন্ড গুলি এবং দু’টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। গত ১ মে ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেও রনি স্পষ্ট করে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন না। ওইদিন রনিকে আদালতে হাজিরে করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে ডিবি কার্যালয়ে নেয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর চিকিৎসা শেষে ৬ জুন আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়। যদিও আদালতের নির্দেশে গত মঙ্গলবার থেকে রনিকে রিমান্ডে এনেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাকে সতর্কভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
নিহত দুইজনের পরিবার অসহায়:
স্বামীর মৃত্যুর পর রাজধানীর নন্দীপাড়ায় ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীনের আশ্রয়ে আছেন ইয়াকুব আলীর স্ত্রী সালমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘স্বামীর চিকিৎসা ও সংসারের ঝামেলায় ৭০ হাজার টাকা দেনা হইছি। আমার স্বামী হাড়ভাঙা পরিশ্রম কইরা আমারে খাওয়াইতো। এখন আমার কী হইব? আমি কেন এই বয়সে এইভাবে বিধবা হইলাম, এর বিচার চাই।’
তিনি জানান, ইয়াকুব এক বছর ধরে রাতে জনকণ্ঠের সিএনজি অটোরিকশা চালাচ্ছিলেন। প্রতিদিনের মতো ১৩ এপ্রিল ৬টার দিকে কাজে যান তিনি। গাড়ির মালিক ফারুক রাত ২টার পর সালমাকে ঘটনা জানান।
মধুবাগের ৩ নম্বর দুলালের বস্তির দোতলা ঘরের একটি ছোট কক্ষে গিয়ে আব্দুল হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা দুদু মিয়াকে পাওয়া যায়। সন্তানের মৃত্যুর কথা তুলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। মনোয়ারা গৃহকর্মীর কাজ করেন। বৃদ্ধ দুদু মিয়া রিকশাচালক। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে হাকিম ছিল বড়। রাতে রিকশা চালিয়ে সংসারের খরচ জোগাতেন হাকিমই। উপার্জনক্ষম ছেলের মৃত্যুর পর কাজে নামতে হয়েছে মা-বাবাকে। তারা জানেন না, কী ছিল হাকিমের অপরাধ? কেন, কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন হাকিম।
‘আমরা বাবা কিছু জানি না। কেডা, ক্যমনে মারলো? পুলিশ কইছে বাইর করব? বাইর করলে কী? গরীবের বিচার নাই!’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন মনোয়ারা। আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে জানাতেই বিস্ময় প্রকাশ করেন দু’জন।
দুদু মিয়া বলেন, ‘কেডা মারছে আমার ছেলেরে? কেউ আমাগো কিছু কয় নাই। আমরা গরীব বইলা কেউ জিগায়ও না।’
স্বজনরা জানান, নিহত হাকিম স্থানীয় দুলালের গ্যারেজের রিকশা চালাতেন। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়। তিন বছর আগে মঞ্জুমা নামে একজনকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন তিনি। তবে বিয়ের এক বছর পরই স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর আর বিয়ে করেননি হাকিম।”জুম বাংলা
Discussion about this post