ডেস্ক রিপোর্ট
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন গুদাম থেকে আড়াই হাজার বস্তা (১১৫ মেট্রিক টন) খাদ্য অধিদপ্তর সন্দেহমূলক জব্দ করে নিলামে তোলা সরকারি চাল ও গম ওই ব্যবসায়ীদের কাছে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
এ রায়ের ফলে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এনএসআইয়ের যৌথ অভিযানে সরকারি সিল লাগানো কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রকল্পের নিলামে তোলা ৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ২০ মেট্রিক টন গম ব্যবসায়ীদেরকে রায়ের কপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে হবে।
রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আবেদনকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান।এ সংক্রান্ত এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১২অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। অন্যদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত জাহান।
এর আগে গত ২১ মার্চ হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ চাল ও গম নিলাম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
নিলাম স্থগিত করে, রিটকারীদের চাল গম আটক করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বাদীকে কেন চাল-গমগুলো ফেরত দেওয়া হবে না, সেজন্য হাইকোর্ট রুলও জারি করেছেন।আদালতে ওইদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
ওই রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার রায় দিলেন হাইকোর্ট। রায় পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মালিককে এসব চাল ও গম ফেরত দিতে বলা হয়েছে।অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে কাবিখার (কাজের বিনিময়ে খাদ্য)। খাদ্য অধিদপ্তর হলো খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান। ওই সময় অন্যান্য ব্যবসায়ীর ইন্দনে খাদ্য অধিদপ্তরের দোহায় দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাবিখার (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) জব্দ করেন।
যদিও খাদ্য অধিদপ্তরের তদন্তে কাবিখার (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রমাণ পাওয়ার পরেও তারা ওই চাল গম নিলামে তোলেছিল। মূলত কাবিখার (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রকল্পের সভাপতিরা চাল-গম রিট পিটিশনারদের কাছে বিক্রি করে ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
তারপরেও এসব চাল ও গম নিলামে তোলায় প্রতিকার চেয়ে রিট করা হয়। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ ওই চাল ও গম ফেরত দেওয়ার জন্যে বলেছেন হাইকোর্ট।
ওই চাল ও গম খাদ্য অধিদপ্তরের বস্তায় পাওয়ায় তাদের মনে করে খাদ্য অধিদপ্তর জব্দ করে। আসলে তা ছিল কাবিখার, যা প্রকল্প সভাপতিরা আবেদনকারীর কাছে বিক্রি করে ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। ২০২০ সালের ২ জুলাই কমলনগরের আব্দুর রবের মালিকানাধীন গোডাউনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এনএসআই যৌথ অভিযান চালায়।
অভিযানে গুদাম থেকে ৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ২০ মেট্রিক টন গম জব্দ করা হয় এবং গোডাউনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন নিলামের জন্য গত ৮ মার্চ দরপত্র আহ্বান করে। পরে নিলামের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
Discussion about this post