নিজস্ব প্রতিবেদক: টেলিভিশন টকশোতে নারী সাংবাদিককে কটূক্তি করা নিয়ে মানহানির মামলায় গ্রেফতার হওয়া সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএসএমএমইউ) এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর বিশেষায়িত হাসপাতালে ব্যারিস্টার মইনুলের চিকিৎসা ও রংপুরের আদালতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। মইনুল হোসেনের স্ত্রী সাজু হোসেন এ রিট দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে রংপুর কারা কর্তৃপক্ষ ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মইনুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় আজ বোর্ড গঠন করে মইনুলকে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ অক্টোবর রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির উদ্দেশে করা মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। মাসুদা ভাট্টিসহ নারী সাংবাদিকরা মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। ওই সময় ব্যারিস্টার মইনুল লিখিতভাবে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে ঘটনার চার দিনেও ব্যারিস্টার মইনুল প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলা করেন মাসুদা ভাট্টি। মইনুলের মন্তব্যকে নারী সমাজের জন্য অবমাননাকর দাবি করে একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে জামালপুরের আদালতেও মামলা করেন একজন নারী। যদিও ওই দুটি মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। তবে একই ঘটনায় কুড়িগ্রাম ও রংপুরের আদালতে পৃথক দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে রংপুরের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরে গত ২৩ অক্টোবর মইনুলকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম। এরপর সেদিন বিকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জস্থ কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারিস্টার মইনুলকে। এরপর গত ৩ নভেম্বর ব্যারিস্টার মইনুলকে রংপুরের কারাগারে পাঠানো হয়।
Discussion about this post