ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের আলোচিত কোটিপতি পিয়ন ইয়াছিনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার তাকে ৫৪ ধারায় আটক করে আদালতে প্রেরণ করে সদর মডেল থানা পুলিশ। সাব রেজিস্ট্রি অফিসের লোকজনই ইয়াছিনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজ আহমেদ জানিয়েছেন- সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিবন্ধন অধিদফতর, ঢাকার আইআরও নৃপেন্দ্রনাথ শিকদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগে বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া টাকা ব্যাংকে জমার বদলে ভুয়া সিল-স্বাক্ষর দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ করা হয়। আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমান পাঁচ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। শুক্রবার অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইয়াছিনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি তদন্ত করার এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের। আমরা অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনের কুমিল্লা কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে পিয়ন পদে চাকরি পান ইয়াছিন মিয়া। এর আগে তিনি মাস্টার রোলে এখানে কাজ করতেন। ইয়াছিন জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি ইউনিয়নের আতুয়াকান্দি এলাকার মোহন মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান পোস্টিং নাসিরনগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে হলেও ডেপুটেশনে সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসেই কাজ করতো সে।
গত ২৬শে নভেম্বর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অডিট কার্যক্রম শুরু করেন নিবন্ধন অধিদপ্তর, ঢাকার আইআরও নৃপেন্দ্রনাথ শিকদার। সরকারি বিভিন্ন ফি’র চালান ঠিক আছে কী-না সেটি যাচাই করতে সাব-রেজিস্ট্রারকে ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন নৃপেন্দ্র নাথ শিকদার। পরে ইয়াছিনকে সঙ্গে নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজ সোনালী ব্যাংকে যান। ইয়াছিনকে নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার পর কয়েকটি চালান মিলিয়ে দেখেন এগুলোর টাকা জমা করা হয়নি। সিল ও স্বাক্ষর জাল করে এসব টাকা জমা দেখানো হয়েছে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি অডিট কর্মকর্তাকে জানানোর পর গাঢাকা দেয় ইয়াছিন। এ ঘটনায় ২৯শে নভেম্বর সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সাব রেজিস্টার। এরপরই ইয়াছিনের সম্পদের খোঁজ মেলে। জেলা শহরে তার তিনটি ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে। বিয়েও করেছেন তিনটি।
Discussion about this post