বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার প্লাস, জলসা ও জি বাংলার সম্প্রচার বন্ধে করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি আগামী ২২ অক্টোবর (রোববার)।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারাপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে ওইদিন এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ তালিকা দেয়া রয়েছে।
ভারতীয় এ তিনটি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে সম্প্রচার বন্ধে আপিল আবেদনের উপর এর আগে ‘নো অর্ডার’ দেন চেম্বারজজ আদালত। ওইদিন আইনজীবী একলাস উদ্দিন ভূইয়া বলেন, আদালত রায়ে আমাদেরকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেছেন। আমরা রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর সেই আবেদন করব। গত সোমবার হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ডিজিটাইজেশনের এই যুগে বাস্তবতা নিয়ে চোখ বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। তবে এমন কোনো অনুষ্ঠান দেখানো ঠিক নয়, যা আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে ব্যাহত করে। এ ক্ষেত্রে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী একটি কমিটি করার বিধান রয়েছে। যেই কমিটির দায়িত্ব টেলিভিশন অনুষ্ঠানসমূহ মনিটরিং করা।
আদালত আরও বলেন, কোনো অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ফলে যদি ব্যক্তিগতভাবে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা সংক্ষুব্ধ হয়, তবে তাকে সরকারের কাছে অভিযোগ করতে হবে। আইন অনুযায়ী এ সংক্রান্ত অভিযোগ সরকারকে সাতদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হয়। কিন্তু রিটকারী সে ধরনের কোনো আবেদন করেননি। এ রিটের কোনো মেরিট আমরা খুঁজে পাইনি। তাই এই রিট খারিজ করা হলো।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে রোজার ঈদকে সামনে রেখে স্টার জলসার ‘বোঝে না সে বোঝে না’ সিরিয়ালের পাখি চরিত্রের নামে পোশাক কিনতে না পেরে বাংলাদেশে অনেকে আত্মহত্যা করে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেসব সংবাদ যুক্ত করে ওই বছরের আগস্ট মাসে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট করেন আইনজীবী সৈয়দা শাহীন আরা লাইলী।
প্রথমে রিট শুনানিতে অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ উত্থাপিত হয়নি মর্মে তা খারিজ করে দেন। এরপর আবার নতুন করে রিট আবেদন করা হলে প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৯ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে বাংলাদেশে ভারতীয় তিনটি টিভি চ্যানেলের (স্টার জলসা, স্টার প্লাস ও জি বাংলা) সম্প্রচার বন্ধে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
পরে রুল শুনানিতে সম্প্রচার বন্ধের আরজি জানিয়ে করা রিট খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। এ রায় স্থগিত চেয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আবেদন করা হয়।
Discussion about this post