ভার্চুয়াল কোর্টকে সফল করতে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন
ডেস্ক রিপোর্টঃ-
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসূল হক বিচার বিভাগে করোনা ভাইরাস কোভিট -১৯ মোকাবিলার করার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ভার্চূয়াল কোর্টের মাধ্যমে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০,০০০ হাজারের বেশি মামলা নিস্পত্তি করা হয়েছে। কারাগার গুলোতে ওভার পপুলেশন সমস্যার নিরোশন করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল কোর্টের অনেক সাফল্য পাওয়া গেছে। ভার্চুয়াল কোর্টকে আরো সাফল্যমণ্ডিত করতে গেলে বিচারক ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন’।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) মুন্সিগঞ্জে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আট তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ভার্চুয়াল কোর্টকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য প্রধান বিচারপতি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার জন্য আইসিটি বিভাগকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে যা এখন পরিকল্পনা কমিশনে আছে। এ প্রকল্প কিছুদিনের মধ্যে একনেক মিটিংয়ে উঠবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৩১ লাখ মামলার জট থাকবে না। গত ১২ বছরে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনা যতটা সক্রিয় ছিলেন তার পাশাপাশি সহযোগিতা করেছে বিচার বিভাগ। এই সহযোগিতা এবং বিচার বিভাগের কাজ যেভাবে চলছে সেভাবে চলতে থাকলে নিশ্চিত বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ সফল হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘৩১ লাখ মামলা জট নিয়ে সরকার অত্যন্ত সজাগ। এ জট নিরসন করা হবে। এ জট নিরসনের জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি আদালত সংখ্যা বাড়াচ্ছে, বিচারকের সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি কর করা হচ্ছে। তাছাড়া সরকার আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। যে মামলাগুলোর বিচার না হলে আইনের শাসন ব্যাহত হতো সেগুলোর বিচার তার সরকারের মেয়াদে সম্পন্ন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগকে সুযোগ-সুবিধা দিলে এবং অবকাঠামো দিয়ে সহায়তা করলে বিচার বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করতে পারে। বিচার বিভাগের অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে আরও শক্তিশালী করার জন্য মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল একাডেমি স্থাপন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন প্রকল্পটির ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। আইনজীবীদের জন্য ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। বিদেশে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকে বহু কষ্ট করে, বহু ত্যাগ-তীতিক্ষার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকে এই বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। আজকে আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক বলে নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। আমি এই স্বাধীন দেশের মন্ত্রী হয়েছি, আপনারা স্ব-স্ব আসন পেয়েছেন। এই দেশকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। তাই আসুন বাংলাদেশকে আমাদের ভালোবাসা দিয়ে, কাজ দিয়ে সারা বিশেষ আইনের শাসন রক্ষায় একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত করি। যেমনটি করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অনেক কষ্ট করে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন।’
মুন্সিগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. জাকারিয়া মোল্লা প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।
Discussion about this post