নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে দুদকের করা এক মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের আদেশ পুনঃবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন খারিজ হয়েছে। ফলে এ মামলায় বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য নেয়া চলমান থাকবে।
আজ রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজের পক্ষে শুনানি করেন।
পরে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, এ মামলা ঢাকার একটি আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। অনেকগুলো সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণও হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩১ মার্চ ওনার (মওদুদ আহমদ) একটি পিটিশনের অনুলিপি পেয়েছি। যেখানে তিনি বলছেন-হাইকোর্টে তার ট্যাক্স বিষয়ে মামলা আছে। সেগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছেন।
এর আগে গত ৪ মার্চ বিচারিক আদালত এ আবেদন নাকচ করলে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। পরে ৮ এপ্রিল আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত কোনো স্থগিতাদেশ না দিয়ে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
১৪ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মওদুদ আহমদের লিভ টু আপিল আবেদন খারিজ করে দেন। তার আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে থাকা তার ট্যাক্স বিষয়ক রিট মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। ১৪ মের ওই আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেন মওদুদ আহমদ। যেটি আজ রবিবার খারিজ হয়ে যায়।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৮৭ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৪ কোটি ৪০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭৫ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। এই মামলায় গেল বছরের ২১ জুন মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। দুদকের আইনজীবী জানান, ইতোমধ্যে ৪৫টি সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
আদালতসূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ৩ জুলাই মওদুদকে তার নিজের, স্ত্রীর ও পোষ্যদের নামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও তার উৎস জানাতে নির্দেশ দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ২৩ জুলাই তিনি দুদকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করেন।
সম্পদের হিসাব বিবরণীতে মওদুদ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার ২৮৭ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ৪ কোটি ৪০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক শরিফুল হক সিদ্দিকী বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় মওদুদের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেন। পরের বছরের ১৪ মে তদন্ত শেষে তিনি এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) আদালতে দাখিল করেন।
চার্জশিট দাখিলের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সাল থেকে প্রায় ছয় বছর এ মামলার বিচার কাজ স্থগিত ছিল। ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। ২০১৭ সালের ২১ জুন এ মামলায় মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত।
Discussion about this post