বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া জামিননামায় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিহ্নিত, দাগি ১০৬ আসামিকে মুক্ত করার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে শনাক্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন্নাহারের স্বাক্ষর জাল করে ৭৬ মামলার ওই আসামিদের কারাগার থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়। সূত্র জানায়, ভুয়া জামিননামায় কারাগার থেকে আসামি মুক্ত করার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করে পাঁচজনকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক। প্রাথমিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বরখাস্ত হওয়া বেঞ্চ সহকারী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের নেজারত বিভাগের কর্মচারী (এমএলএসএস) শেখ মো. নাঈমকে আসামি করে থানায় মামলা করা হলেও দুদক পাঁচ মাস তদন্ত চালিয়ে তাদের অপরাধের যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ বের করেছে। এ দু’জনকে জালিয়াতির মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য তিনজন হলেন- অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের উমেদার মো. আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. ইসমাইল।</p> >দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই মামলাটির চার্জশিট পেশ করা হবে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী এই জালিয়াতির ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন। চার্জশিটে তাকেই প্রধান আসামি করা হচ্ছে। জানা গেছে, ওই পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে জালিয়াতির প্রমাণসহ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। কমিশন প্রতিবেদন খতিয়ে দেখে চার্জশিটের অনুমতি দেবে। যেভাবে জালিয়াতি হয় দুদকের তদন্তে দেখা যায়, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের উমেদার আলমগীর হোসেন ও মো. ইসমাইল শুনানি না করে প্রতারণামূলক বিচারকের খাস কামরায় জামিন মঞ্জুর হওয়ার কথা বলে ওই ৭৬টি মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে আসামিদের জামিননামা গ্রহণ করেন। এর পর অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া জামিননামা তৈরি করেন। আলমগীর ও ইসমাইল ওইসব ভুয়া জামিননামায় ভুয়া স্মারক নম্বর দিয়ে অন্যান্য অভিযুক্তের সহায়তায় সুকৌশলে তা পর্যায়ক্রমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন। একই সঙ্গে আসামিদের একটি পাসপোর্ট ও দুটি মোটরসাইকেল জিম্মায় দেওয়া হয়।
Discussion about this post