বিডি ল নিউজ : জন্মদিনের কেক কাটলেও খাওয়া হলো না তার৷ নিজের এমন অনেক গোপন কথাই বললেন ফাওয়াদ খান৷ বিয়ে থেকে অসুখ-বিসুখ- কোনো কিছুই বাদ রাখলেন না তিনি।
বলিউড হিরোদের মধ্যে নতুন হার্টথ্রব ফাওয়াদ খান৷ অনেকেই হয়তো জানেন না ফাওয়াদ বিবাহিত৷ তার স্ত্রীর নাম সরফ৷ আড়ালে থাকাটাই তার পছন্দের৷ যদিও যারা তাকে দেখেছেন, তারা বলেন, সরফ নাকি দুর্দান্ত সুন্দরী৷
এবকম একজন ডাকসাইটে সুন্দরী স্ত্রী রয়েছেন বাড়িতে৷ অথচ স্বামীকে পেশার কারণেই বলিউডের তাবড় সুন্দরীদের সঙ্গে কাজ তো করতে হচ্ছেই, তার পাশাপাশি মহিলা ভক্তের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়৷
কীভাবে সামলান ঘর? সরফ সব কিছুতে আমার সঙ্গে থাকে৷ ‘খুবসুরত’-এর প্রিমিয়ারে ও সোনমের সঙ্গে ছবিও তুলেছে৷ ও খুব ভালো করেই জানে, যেভাবে আমি পর্দায় অভিনয় করি, সেটা আমার ব্যক্তিগত জীবন নয়৷ জীবন তার থেকে অনেকটাই আলাদা৷ কিন্ত্ত আমাদের জীবনটা একটা সত্যি ঘটনা’, বলেছেন ফাওয়াদ৷
পাকিস্তানে টেলিভিশন-সিরিয়াল ‘হামসফর’-এ কাজ করার পর থেকেই তার খ্যারিয়ার গ্রাফ উর্ধ্বমুখী৷ শুধু ক্যারিয়ার-গ্রাফই না মহিলা-ফ্যানেদের সংখ্যাও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে, সে কথাও মেনে নিয়েছেন ফাওয়াদ৷ এ ঘটনা যে তার স্ত্রীকেও যথেষ্ট বিরক্ত করে, মেনে নিয়েছেন সেটাও৷
এটা একেবারেই বলতে পারি না, সরফের এসব দেখে বিরক্ত লাগে না৷ নিশ্চয়ই লাগে৷ যেখানে যাই, ফ্যানেরা আমায় ঘিরে ধরে৷ কিন্ত্ত এটাও আমরা বুঝে নিয়েছি, আমার পেশাটাই এমন, যেখানে এগুলো স্বাভাবিক৷ কিন্ত্ত এর কারণে নিজেদের বিয়েটা সমস্যায় ফেলা যাবে না৷
এটাও স্বীকার করতে বাধ্য, সরফের জায়গায় আমি থাকলে আমারও একই রকম লাগতো৷ হয়তো এখটু বেশিই লাগতো, বলেছেন সুপারস্টার৷ তবে এটাও সত্যি, ফাওয়াদের প্রেমকাহিনী দেখে বাকিদের ক্লান্তই হয়ে যাওয়ার কথা৷ ১৬ বছর বয়স থেকে সরফের সঙ্গে রয়েছেন ফাওয়াদ৷ আর এখনো তাদের আলাদা করা সম্ভবই নয়, নিজেই জানিয়েছেন সে কথা৷
প্রেমের কথা তো হলো৷ কিন্তু ক্যারিয়ারের কথা বলতে গেলে ফাওয়াদ স্বীকার করেন, জীবনের অনেকটা সময় তিনি নষ্ট করে ফেলেছেন অভিনেতা হবেন নাকি সঙ্গীতশিল্পী, সেটা ঠিক করতে না পেরে৷ ফাওয়াদের কথায়, আমি ছিলাম অ্যাংরি ইয়াং ম্যান, রেবেল৷
নিজের সব অনুভূতি গানে ঢেলে দিয়েছিলাম৷ তবে অভিনয়ের চেয়ে রক-গান গাওয়ার সময় নিজেকে অনেক বেশি শক্তিশালী মনে হতো, এটাও বলছেন তিনি৷ মনে হতো, নিজের একটা অন্য অস্তিত্ব তৈরি করতে পারব৷ দুনিয়া পাল্টাতে পারবো’, জানালেন ফাওয়াদ৷
তবে গান গাওয়ার পাশাপাশি অন্য চাকরি করারও চেষ্টা করতেন ফাওয়াদ৷ তখনই শোয়েব মনসুরের ‘খুদা কে লিয়ে’তে সুযোগ পান৷ জীবন পাল্টাতে শুরু করে৷ ‘খুদা কে লিয়ে’র অডিশনের কথা মনে করতে গিয়ে ফাওয়াদ জানান, মজার এক অভিজ্ঞতার কথা৷ গিয়ে দেখি টেবিলে আলি জাফরের ছবি রাখা৷
জাফর ছিলেন নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ৷ পরিচালকও বলেন, চরিত্রটার জন্য আমি নাকি একটু বেশিই মোটাসোটা৷ তাই বাতিলও করে দেয়া হয় আমাকে’, বলেছেন ফাওয়াদ৷ কিন্ত্ত তারপর এমনিই ওজন ঝড়াতে থাকেন তিনি৷ পরের কয়েক মাসে নিজের ওজন অনেক খানি কমিয়ে ফেলেন৷
তখনই একদিন ফোন আসে ‘খুদা কে লিয়ে’র টিম থেকে৷ জিজ্ঞেস করা হয়, এখনো ইচ্ছে আছে কি না, এই চরিত্রে অভিনয়ের৷ ‘খুদা কে লিয়ে’র পর ‘হামসফর’, তারপর ‘জিন্দেগি গুলজার হ্যায়’, আর তারপরই বলিউডের দরজা খুলে যায় তার সামনে৷
প্রেম হলো, ক্যারিয়ার হলো কিন্তু তারপরেও জীবনে কোনো সমস্যা নেই বলিউডের উঠতি তারকার, এমনটাও নয়৷ ‘খুবসুরত’-এর শ্যুটিংয়ের একটা গল্প থেকেই উঠে এলো সেই কথা৷ তার জন্মদিনের দিনও শ্যুটিং হচ্ছিল৷ বাড়ি যেতে পারেননি সেদিন৷
তাই ছবির ইউনিটের লোকজনই একটা সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করে৷ আমি সেখানে কেক কাটার সঙ্গে সঙ্গেই আমার স্ত্রী আর ছেলের রেকর্ডেড ভয়েস বেজে ওঠে, আমার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে৷ আর আমার জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছিলো সুগার-ফ্রি কেক, জানিয়েছেন ফাওয়াদ৷ কিন্ত্ত চিনি ছাড়া কেন? কারণ ফাওয়াদের ডায়াবেটিস আছে৷ সে কথাও লুকোতে চাননি এ তারকা৷
এখন হাতে একের পর এক কাজ৷ ফাওয়াদের ভক্তরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন৷ তার নাম এখন প্রচুর মানুষকে টানছেও৷ ফাওয়াদ নিজে যে এতে খুশি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করবেন, নিজের সেরাটা দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
তাকে খুব ঘনিষ্ঠ বা সাহসী দৃশ্যে দেখা যাবে কি না সেই প্রশ্নের সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’তে উত্তর পাওয়া না গেলেও অভিনয়ের সব ধরনের ক্ষেত্রতেই যে তিনি বিচরণ করতে চান, এমন এক স্বপ্নের কথা তিনি ব্যক্ত করেছেন৷
দস্যু, কমেডিয়ান কিংবা সিরিয়াল কিলার- তিনি সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চান৷ ফাওয়াদের কথায়, আমি সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই৷ তবে চাহিদা একটাই, চিত্রনাট্যটা ভালো হতে হবে৷ তথ্যসূত্র : এই সময়
Discussion about this post