যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ না করে এবং রাসায়নবিদ ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই ঔষধ উৎপাদনের অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার চারটি ঔষধ তৈরির প্রতিষ্ঠানকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শনিবার র্যাব-১০ এর সিনিয়র এএসপি মো. সাজ্জাদ হোসেন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক মো. ওয়ালী উল্লাহর উপস্থিতিতে যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, যাত্রাবাড়ীর পূর্ব কেরানীপাড়ার ‘জে বক্স এন্ড কোং লিঃ’ ঔষধ কারখানায় পরিদর্শন করে দেখা যায়, ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানের কোনটিরই মান সঠিকভাবে পালন করা হয়নি। এমনকি কোনো রাসায়নিক উপাদানের বোতলের গায়ে মেয়াদ ও ব্যাচ নম্বর সম্পর্কিত কোনো তথ্যই নেই। উৎপাদিত ঔষধের বোতলের গায়ে লিখিত ব্যাচ নম্বর এবং মান নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখাতে বললে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অকপটে স্বীকার করেন যে, আসলে সঠিকভাবে মান নিয়ন্ত্রন না করায় মান নিয়ন্ত্রন সংশ্লিষ্ট কোন কাগজপত্রই সংরক্ষণ করা হয়নি। অভিযান চলাকালে দেখা যায় কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার হিসেবে যিনি কাজ করছেন তার নাম কিরন কির্ত্তন। তিনি ঢাকার একটি কলেজ থেকে দর্শন বিষয়ে মাষ্টার্স পাস করে মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে ১৫ দিনের একটি কোর্স করেন। তাছাড়া নেই কোনো স্বীকৃত রাসায়নবিদ। অত্যন্ত নোংরা পরিবেশেই তৈরি করা হচ্ছে ৫২ রকমের বিভিন্ন ঔষধ। এ সব কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও মান নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৫ দিন সময় বেধে দেন।
তিনি আরও জানান, কোনাপাড়া কাঠের পুল এলাকায় ‘ইউনিক হোমিও ল্যাবরেটরীজ’, ‘লাইফ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস’ এবং ‘নাস ফার্মাসিউটিক্যালস’ এ পরিদর্শন করে প্রত্যেকটির প্রায় একই চিত্র দেখা যায়। কোনটিতেই নেই যোগ্যতাসম্পন্ন রাসায়নবিদ ও ফার্মাসিস্ট। মান নিয়ন্ত্রণের নূন্যতম শর্ত ও তারা পালন না করেই উৎপাদন করছে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ধরনের ঔষধ। এ সব কারণে ইউনিক হোমিও ল্যাবরেটরিজকে ৩ লাখ টাকা, লাইফ কেয়ার ফামাসিউটিক্যালসকে ৪ লাখ টাকা এবং নাস ফার্মাসিউটিক্যালসকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে মানোন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগ করার জন্য ১৫ দিন সময় বেধে দেওয়া হয়।
Discussion about this post