মানুষখানা
আমরা আর হাত মিলাই না আগের মতন
জরিয়ে ধরে বুঝতে দেইনা
পরষ্পরের মনের অবেগ
এখন আমরা একে অপরের ৩ থেকে ৬ ফুট দূরে।
শিশুরা স্কুল মাতিয়ে করেনা খেলা
স্কুলের বাইরে আর জমেনা মায়েদের স্টার জলসার নাটকের আলাপ
রাস্তার ধারে বিলুপ্ত প্রায় অস্বাস্থ্যকর খোলা খাবারের ঠেলাগুলো
সবার মুখের হাঁসি হাড়িয়ে গেছে মাস্ক নামক হাজতের আড়ালে!
বেঁচে থাকার আশা নিয়ে আমাদের জগৎ এখন জ্বানালা আর ছাদ থেকে চোখ যতদূর যায় ততটুকু,
এ যেন এক চিরিয়াখানার মতই মানুষখানা।
সবকিছু, সবকথা, সববিষয়ের সাথে একটা শব্দ জুড়েই থাকছে
ভাল্লাগে’না!
মাঝে মাঝে মনে হয়
আমরা যেন ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি!
আর সবকিছু ঘটে চলেছে ঘুমের মধ্যে।
মোরশেদ সাহেব ভাবছেন এমাসের বেতন পেলে ঘরে এসি লাগাবে
ছেলেটা মাধ্যমিকে এ প্লাস পেলে ওকে একটা এনড্রয়ড ফোন কিনে দেবে
বস্ হয়ত এইবার তার প্রমশন কনফার্ম করবে।
মানিক এইবার চাকরিটা না হলে ব্যবসা করবে কনফার্ম
হয়ত চাকরি পেলেই একটা ভালো পাত্রী দেখবে
এদিকে সুমির মায়ের এক কথা
মেয়েটার অনেক হইছে লেখাপড়া এখন ওরে বিয়া দিয়া দিমু
দরকার হইলে বিয়ার পর লেখাপড়া করবো।
জাফর মিয়া এইবার বিল্ডিংয়ের আরও একতলা কমপ্লিট করবে সে মনে মনে ভাবছে,
এই গল্প করে ফরিদের কাছে।
কিন্তু কেউ তো ভাবেনি আমরা চিরিয়াখানার মতন মানুষখানায় বন্দী হতে যাচ্ছি!
আর প্রিয় বন্ধুকে বুকে জরিয়ে ধরতে পারবো না
হাত মেলাতে পারবো না পরিচিত জনের সাথে হাড়িয়ে যাবে সব হাসিমুখ মাস্কের আড়ালে!
এক অবিকল ৭১ এ দারিয়ে মুক্তির আহাজারির মতন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের বেঁচে যাওয়া বন্দীদের মতন অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব আজ মুক্তির আশায়
আবার একদিন তোমাকে বুকে জরিয়ে ধরবো বলে!
Discussion about this post