হোল্ডিং ট্যাক্সের সাড়ে ২১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এ মামলার অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে তা প্রত্যাহারে জন্য দুদক চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি হোল্ডিং ট্যাক্সবাবদ ২১ কোটি ৪৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম।
মামলায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরিদুর রহমান খান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার মিসেস রহিমা বেগমকে আসামি করা হয়েছে।দুদক চেয়ারম্যানকে পাঠানো ইউনাইটেড হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাজমুল হাসানের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর অঞ্চল-৯ এর উপ-কর কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সরেজমিনে হাসপাতালের ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। এরপর তিনি ২৯ কোটি ৩৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বার্ষিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০০৬ সালের ২৪ আগস্ট ত্রৈমাসিক হোল্ডিং ট্যাক্স ৮৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০ টাকা নির্ধারণ করে ২০০৭ সালের ২৬ আগস্ট একটি নোটিশ দেন।
কিন্তু, ২০০৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের এমডি ফরিদুর রহমান ওই করারোপের পরিপ্রেক্ষিতে আপত্তি জানিয়ে অ্যাসেসমেন্ট রিভিউ বোর্ডের (এআরবি) কাছে আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডের বার্ষিক কর ২৯ কোটি ৩৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকার পরিবর্তে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিশ দেয় সিটি করপোরেশন।
এরপর সিটি করপোরেশনের ধার্য করা হোল্ডিং ট্যাক্স না মেনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। যার নম্বর ১৪১২৯/২০১২। আর ওই রিট পিটিশনটি বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন। যেহেতু হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ সম্পর্কিত বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন এবং পুনঃনির্ধারিত ট্যাক্সের হার যেহেতু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কখনই গ্রহণ করেনি। তাই, নির্ধারিত ট্যাক্সের
হার চ্যালেঞ্জ করে মামলা করা হয়েছে। যা বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন। একই বিষয়ে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা সাব-জুডিস বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।চিঠিতে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাৎসরিক হোল্ডিং ট্যাক্স বেজমেন্ট ১৫ টাকার স্থলে ৫ টাকা এবং বেজমেন্ট ব্যতিত অন্যান্য ফ্লোরে ৫০ টাকার পরিবর্তে ১৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সিটি করপোরেশন। যা এখনো বলবৎ রয়েছে।
সেখানে ইউনাইটেড হাসপাতালের বেজমেন্ট ২০ ও অন্যান্য ফ্লোরে ১শ’ টাকা নির্ধারণ করা কখনো যুক্তি সংগত নয়। এমতাবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে রিট মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত গুলশান থানার মামলাটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেটি জানি। তবে আমি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নই। তাই এ বিষয়ে আমার পক্ষে কিছুই বলা সম্ভব নয়। কিছু জানার থাকলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা/বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
বাংলানিউজ
Discussion about this post