শ্বশুর বাড়ির শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে চট্টগ্রামের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। মিতুর বাবা ও পরিবারের সদস্যদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মিতুর স্বামী, পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (এডিসি) এবং মিত্যু হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. কামরুজ্জামান মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন।
এডিসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকায় আমি মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন, তার মা শাহেদা মোশাররফ নীলা ও তার ছোট বোন শায়লা মোশাররফ নিনজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে মিতুর বাবা যেসব কথা বলেছেন, তা যাচাইয়ের জন্য বাবুলকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) কামরুজ্জামান ঢাকায় মিতুর বনশ্রীর বাসায় তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় মিতুর পরিবার তাকে জানান, বাবুল আক্তারের পরিবারের শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের কারণে মিতু তার চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের বাসায় সিলিংয়ে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। এছাড়া, বাবুলকে এসআই আকরামের স্ত্রী বন্বীর সঙ্গে বাবুলের বোন লাবনি বিয়ে দিতে চেয়েছিল বলেও কামরুজ্জামানকে জানান মিতুর পরিবারের সদস্যরা। এসব অভিযোগের মাধ্যমে বাবুল আক্তারের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথাও উঠে আসে। এসব বিষয়ে বাবুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করেছেন বলে জানায় মিতুর পরিবার।
গণমাধ্যমে এ খবর উঠে এলে তা অস্বীকার করেন এসপি বাবুল। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি ওইসব ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে স্ত্রী হত্যার বিচার দাবি করেন। এ প্রসঙ্গে তদন্তকারী কার্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘বাবুলের ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আমি তাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছি এবং সে আমাদের সঙ্গে যথাযথভাবে সহযোগিতা করেছে।’
মিতু হত্যার সঙ্গে বাবুলের জড়িত হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। এ সম্পর্কে এখনই কোনও মন্তব্য করার সময় হয়নি। পুলিশ সব ধরনের সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়েই কাজ করছে।’ মিতুর পরিবারের সদস্যদের মতো বাবুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও পুনরায় কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। এ মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পাশাপাশি র্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকেও মামলাটির তদন্ত করছে।
সুত্র বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post