শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে বশির উদ্দিন বলছিলেন, ‘কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছিলো আর বেঁচে ফিরতে পারবো না। প্রথমবার পড়ে গেলাম। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। তারপর একটু সামনে যেতেই আবার পড়ে যাই। একের পর এক মানুষ আমার ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো, আমি বোধ হয় আর বাঁচবো না। কোনোরকম উঠে দাঁড়ালাম। দেখলাম আমার সামনে আরও কয়েকজন পড়ে গিয়েছে। কিন্তু তারা উঠতে পেরেছে কিনা বলতে পারবো না।’
বিমানবন্দরে বশির উদ্দিনের দেখা পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। বলেন, ‘মিনার ঘটনা টেলিভিশনে দেখে বাড়ির সবাই কান্নাকাটি শুরু করেছিলো। কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। পরের দিন বাড়িতে ফোন করে জানাই, আমি ঠিক আছি।’
নিজের পায়ের নিচেই অনেক মানুষ পড়েছে- ভাবতেই চোখে পানি চলে আসে নুরুল আমিনের। তার বয়স প্রায় ৫৫। বলেন, ‘তিনটা গেটের দুইটা গেটই বন্ধ করে দেওয়া হলো। লাখ লাখ মানুষ এক গেট দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের প্রচুর চাপ। এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়ানোর উপায় নেই। কেউ ইচ্ছা করলেও ওখানে দাঁড়াতে পারবে না। কেন জানি মনে হয় আমার পায়ের নিচেও কি কেউ পড়েছিলো? তখন আর কিছুই ভাবতে পারি না।’
বশির উদ্দিন-নুরুল আমিনরা বলছিলেন, মিনা ট্র্যাজেডির দুঃসহ বেদনার পর ফিরতি ফ্লাইট জটিলতায় নানামুখী ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজিরা। তবে, এ ভোগান্তি লাঘবের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফ থেকে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে মিনার বড় জামারাতে পদদলিতের ঘটনায় ৭৬৯ হাজির মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অন্তত ৯৩৪ হাজী। ওই ঘটনায় ১০ বাংলাদেশি হাজি নিহত হয়েছেন এবং ৯৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
Discussion about this post