রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা নাশকতার তিন মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে এ নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেনের আদালত।
বিকেল পৌনে চারটার দিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান মির্জা ফখরুল। আত্মসমর্পণের জন্য তার করা সময়ের আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মঞ্জুর না করার পরদিন বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
এ আবেদনের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করা হয়।
জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন মেজবাহ প্রমুখ।
এর আগে সোমবার (০২ নভেম্বর) আত্মসমর্পণের জন্য আরও সময় চেয়ে করা মির্জা ফখরুলের আবেদন নামঞ্জুর করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ। ফলে মঙ্গলবারের মধ্যে তার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের বাধ্যবাধকতা ছিল।
তবে, এ তিন মামলার জামিন আবেদনে হাইকোর্টের জারি করা রুল দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে আদেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
গত ২১ জুন ওই তিন মামলায় ফখরুলকে জামিন দিয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন বিচারপতি মো. রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। তার স্থায়ী জামিন প্রশ্নে রুলও জারি করেন আদালত। গত ২৯ জুন জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। পরে সেটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত।
গত ১৩ জুলাই এ তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রেখে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। এর আগে গত ২৮ জুন পল্টন থানার দু’টি ও মতিঝিল থানার একটিসহ নাশকতার অপর তিন মামলায়ও হাইকোর্টের জামিন আপিল বিভাগ বহাল রাখেন। ফলে সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কারাবন্দি ফখরুলের জামিনে মুক্তি পেতে সব বাধা দূর হয়।
এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে চলে যান ফখরুল। দেশে ফিরে আবেদন জানিয়ে আত্মসমর্পণের মেয়াদ দু’দফা বাড়িয়ে নেন তিনি, যা শেষ হয়েছে ২ নভেম্বর।
নাশকতার কাজে উস্কানি, প্ররোচনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্টন ও মতিঝিল এলাকায় হরতালের মধ্যে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গত ৪ ও ৬ জানুয়ারি এসব মামলা দায়ের করে ওই দুই থানা পুলিশ।
গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Discussion about this post