প্রায় ৪১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিষ্টি ব্যবসায়ী শেখ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে গতকাল সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা অনুযায়ী মামলাটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে শেখ মোহাম্মদ আলী ৩০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দেন। ২০১৬ সালের ৩০ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) দাখিলকৃত আয়কর নথিতেও প্রায় কাছাকাছি সম্পদের ঘোষণা দেন তিনি। তবে আয়কর নথি বিশ্লেষণ করে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পারেন, অভিযুক্ত একাধিকবার অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করেছেন। আবার এনবিআরে ঘোষিত সম্পদের মধ্যেও কিছু অপ্রদর্শিত টাকা ছিল, যা বিভিন্ন সময় তিনি বৈধ করেছেন।
জানা গেছে, মিষ্টি ব্যবসায়ী থেকে হুন্ডি ও স্বর্ণের কারবারি বনে যাওয়া শেখ মোহাম্মদ আলীর ৪০ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার ৩৭৫ টাকার গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের সন্ধান পায় দুদক। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে শেখ মোহাম্মদ আলী নিজ নামে মোট ২৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানে তার ৬১ দশমিক ৫৩৮ কেজি স্বর্ণসহ বিদেশী মুদ্রায় ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার ও দেশী মুদ্রায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য জানতে পারে। অর্থাত্ তিনি ৩৯ কোটি ৬৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন।
একই সঙ্গে তার আরো গোপনকৃত ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬ কোটি ১৩ লাখ টাকার বেশি স্থাবর সম্পদ রয়েছে।
দুদক বলছে, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চোরাচালান প্রতিরোধ টিমের এক অভিযানে ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ মোহাম্মদ আলীর পুরানা পল্টনের দুটি বাসায় তল্লাশি করে ৬১ কেজি ওজনের ৫২৮টি স্বর্ণের বার ও দেশী-বিদেশী মুদ্রায় ৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। সে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দায়েরকৃত মামলা ও অভিযোগপত্র দুদকের অনুসন্ধানে আলামত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
Discussion about this post