মিয়ানমারে সেনা-রোহিঙ্গা সংঘর্ষে ৮ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। মাসব্যাপী সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় রবিবার সাকলে পূর্বাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে ওই সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে জাতিগত দমনপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেখানে ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া, নারীদের ধর্ষণসহ নানান ধারার শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন চলছে।
রবিবারের ঘটনায় ৩৬ জনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী। ওই অঞ্চলে মিডিয়া আর ত্রাণ সরবরাহাকারী বাহিনীকে ঢুকতে দিচ্ছে না তারা।
২০১২ সালে ওই রাজ্যের জাতিগত দাঙ্গায় শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হওয়ার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সেখানে চরম উত্তেজনা দেখা গেছে। অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় নয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়। দুই দিনের মাথায় ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরও ১২ জনের মৃত্যুর কথা জানায়। তারা দাবি করে, প্রায় ৩০০ মানুষ পিস্তল এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে সৈন্যদের উপর আক্রমণ করলে সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে।
এবার রবিবারের সংঘর্ষের ক্ষেত্রেও একই কথা বলছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। এবারও বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের উত্তারাঞ্চলের এক গ্রামে বন্দুক ও ছুরি নিয়ে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালায় একদল সশস্ত্র রোহিঙ্গারা। ওই ঘটনায় এক সেনাকর্মকর্তা এবং একজন জওয়ানসহ ৮জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে তারা।
রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার সরকার। সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা মনে করে রোহিঙ্গা মুসলমানরা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গেছে। গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবার পরও এই বাস্তবতার বদল ঘটেনি। বরং নির্বাচনের আগে-পরে ফাঁস হয়েছে কোদ সু চির মুসলিমবিদ্বেষের নানা দিক। নির্বাচনে তিনি মুসলমানদের প্রার্থী করেননি। ‘রোহিঙ্গা’ পরিচয়টিও অস্বীকার করেন সুচি।
এদিকে রাখাইন রাজ্যে এ সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সবগুলো পক্ষকে সংযম দেখানোর আহবান করেছে সংস্থাটি।
Discussion about this post