গুলশানের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর অন্য একটি ফ্ল্যাটের মেঝেতে ঘুমাচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘রাজউক গুলশানের বাড়ি থেকে মালপত্র সরানোর সময় খাট ভেঙে গেছে। সেটি এখন আমার বাসার পুরনো কাঠমিস্ত্রি শংকর মেরামত শুরু করেছে। মেরামত হলে খাটে ঘুমাতে পারব। আপাতত মেঝেতে শুয়েই রাত কাটছে আমার।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সফিউর রহমান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। বিএনপি আইনজীবীদের পক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে চর দখলের মত সরকার আমার গুলশানের বাড়ি দখল করেছে। এটা সম্পূর্ণ মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’
বিরোধী দলের রাজনীতি করার কারণেই বাড়ি ছাড়তে হয়েছে অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, ‘আজ বিরোধী দল করি বলেই রাজনৈতিক কারণে আমাকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। ওই বাড়িতে আমার অনেক স্মৃতি ছিল। আমার দুই ছেলে ছিল। তারা মারা গেছে। তাদেরও অনেক স্মৃতি ছিল ওই বাড়িতে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে দাবি করা হয়েছিল বাড়িটি সরকারের। আদালত বার বার বলেছেন, বাড়িটি সরকারের নয়। এ রকম মামলা এর আগে আরও ৩৬ জনের বিরুদ্ধে ছিল। তাদের বাড়ি ফেরত দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাজনীতি করি বলেই আমাকে বাড়িটি দেয়া হয়নি।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, নামমাত্র মূল্যে দেয়া বাড়ি আমি কেন টাকা দিয়ে কিনব।
পল্লীকবি জসীমউদদীনের নাতি এবং হাসনা মওদুদ ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দুই ছেলে আসিফ মওদুদ ও আমান মওদুদ।
আসিফ মওদুদ ১৯৭৩ সালের ১০ নভেম্বর ও আমান মওদুদ ১৯৭৬ সালের ১০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৮০ সালের ৩০ মার্চ মাত্র ১২ বছর বয়সে মারা যান মওদুদের বড় ছেলে আসিফ মওদুদ। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেয়ার পথে ভোর সাড়ে ৪টায় সিঙ্গাপুরগামী একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয় আমান মমতাজ মওদুদের।
প্রসঙ্গত, গুলশান-২-এর ১৫৯ নম্বরের একতলা বাড়িটিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন মওদুদ আহমদ। বাড়ির বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন (রিভিউ) ৪ জুন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, বাড়ি অবশ্যই ছাড়তে হবে। বাড়িটা বর্তমানে নিয়ে নেয়া সরকারের দায়িত্ব। এরপর ৭ জুন বাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নেন রাজউকের কর্মকর্তারা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ জে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post