মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করে উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভী (আরোপ ও আদায়) বিল-২০১৫ পাস হয়েছে।
বিলের ওপর একাধিক সংসদ সদস্য জনমত যাচাই, বাছাই ও সংশোধনীর দাবি জানিয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
তবে অর্থমন্ত্রী বিলটিকে অত্যন্ত সহজ-সরল বলে মন্তব্য করে বলেন, তাদের প্রস্তাব নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ সদসদ্যের দাবি ভোটে দিলে কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়। পরে স্পিকার বিলটি পাসের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে দিলে তা সর্বসম্মতক্রমে পাস হয়।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে যে বিল নিচ্ছে, তার সঙ্গে এক শতাংশ সারচার্জ যোগ হবে। সরকার মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছ থেকে এ সারচার্জ আদায় করবে। মোবাইল ফোনে যতো ধরনের সেবা রয়েছে তার সবগুলোর ওপরই এ সারচার্জ প্রযোজ্য হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-১৫ সালের বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সার চার্জ আরোপের কথা বলেছিলেন। এ থেকে যে টাকা পাওয়া যাবে তা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে ব্যয় করা হবে বলে অভিমত দিয়েছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, মাত্র এক শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা হলে তা কারও জন্য অধিক করভার হিসেবে বিবেচিত হবে না। এ থেকে প্রায় ১শ ৪০ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হবে।
বিলটি যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব জানিয়ে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, বিলটি আজ আইনে পরিণত হচ্ছে। অথচ আগে থেকেই মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। এতোদিনে অপারেটররা কতো টাকা সারচার্জ হিসেবে আদায় করেছে তা জানা নেই। কিংবা ওই টাকা তারা সরকারের কোষাগারে জমা দিয়েছে কিনা তাও জানা নেই।
এর আগে, সংসদে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী জানেন না বলে জানান।
একই যুক্তি তুলে ধরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম বলেন, নতুন করে সারচার্জ আদায় করা হলে এর প্রভাব পড়বে গ্রাহকদের ওপর। এতে কোম্পানিগুলোর কিছু যায় আসে না। কোম্পানিগুলো হুন্ডির মাধ্যমে এসব টাকা বিদেশে পাচার করছে। এতে জনগণ সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট হবে। তাই বিলটির জনমত যাচাই-বাছাই করা দরকার।
জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, অপারেটরদের কাছ থেকে সারচার্জ কী প্রক্রিয়ায় আদায় করা হবে তা স্পষ্ট নয়। এতে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হবে কিনা জানি না। দেশের ১২ কোটি গ্রাহকের কাছ থেকে ইতোমধ্যে কতোশত কোটি টাকা আদায় করেছে জানি না।
এসবের উত্তর দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারচার্জ আদায় করতে আইনটি করা হচ্ছে। আইন বারবার রচনা করার চেয়ে একবার রচনা করা ভালো। তাই নতুন এ আইনের সঙ্গে লেভী আদায়ের বিষয়টি যোগ করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত সহজ-সরল বিল। সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিবেচনা করে যথাযথভাবে পাসের সুপারিশ করেছে।
Discussion about this post