ম্যাক্সওয়েলের ছায়া দেখা যাচ্ছে সুরিয়া কুমারের মধ্যে

12
VIEWS
Glenn Maxwell and Suryakumar Yadav

বিডি ল নিউজঃ বুধবার কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচটার পর ফেসবুক-টুইটারে শুনছি ঝড় তুলে দিয়েছে সূর্যকুমার যাদব। লোকজন বলা শুরু করে দিয়েছে, সূর্য হল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ভারতের জবাব!

দু’জনের মধ্যে সত্যিই বেশ কিছু মিল আছে। দু’জনেই উইকেটের চার দিকে স্বচ্ছন্দে শট মারতে পারে। তার পর ওরা দু’জনেই পার্ট-টাইম বলটাও করে। আর সবচেয়ে যেটা নজরকাড়া ব্যাপার সেটা হল, ম্যাক্সওয়েল আর সূর্য ইনিংসের শেষের দিকে ব্যাট করে আর বেশির ভাগ সময় এমন সব ইনিংস খেলে যাতে পুরো ম্যাচের রংটাই বদলে যায়। আজকাল যাকে বলা হচ্ছে ‘ক্যামিও’ ইনিংস, সেই ব্যাপারে দু’জনেই সমান কার্যকরী।

বছর চব্বিশের ছেলেটার ঘরোয়া ক্রিকেটের কেরিয়ারও ফেলনা নয়। পাঁচ বছর আগে রঞ্জি অভিষেকে ৭৩ করেছিল। তার পরের মরসুমেই মুম্বইয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করে ফেলে। সে বারই ওকে সেরা অনূর্ধ্ব উনিশ ক্রিকেটারের পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল বলে জানি। গত বার কেকেআরে আসার পর বেশ কয়েকটা ম্যাচ পরের দিকে নেমে জিতিয়েছিল সূর্য। এ বারও যেন সেখান থেকেই শুরু করল।

বুধবার দারুণ খেলেছে সূর্য। ওকে যে চার নম্বরে উঠিয়ে আনা হল, সেই সিদ্ধান্তটার পুরো মর্যাদা দিতে পেরেছে। ও লেট খেলতে পারে, নিজের শটের জন্য যথেষ্ট সময় করে নিতে পারে। উইকেটের পিছনের শটে শক্তিশালী, লেগ সাইডেও খুব ভাল। অফ লেংথ ভাল পিক করতে পারে ছেলেটা। তা ছাড়া আগেই বললাম, সব রকমের শট খেলতে পারে সূর্য। শুধু তাই নয়, ইমপ্রোভাইজ করার ক্ষমতাও আছে। আর ওর ব্যাটিংয়ে বিস্ফোরক একটা ব্যাপার আছে বলে আরও বেশি করে ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে তুলনাটা উঠছে। ওঠা স্বাভাবিকও।

সূর্যর আর একটা প্লাস পয়েন্ট হল পেসারদের মোকাবিলা করার ক্ষমতা। ম্যাক্স পেসারদের বিরুদ্ধে সব সময় স্বচ্ছন্দ নয়। সূর্য সেখানে পেসারের গতিটা ব্যবহার করতে জানে। ফ্লিক শটটা ও দারুণ খেলে। ইডেনেই তো দেখলাম লাসিথ মালিঙ্গাকে কী চূড়ান্ত অবহেলা ভরে মিড উইকেটের উপর উড়িয়ে দিল। পেসারদের থার্ড ম্যানের উপর দিয়ে ওভার বাউন্ডারি মারতেও দু’বার ভাবে না সূর্য।

এই যে ঘরোয়া মরসুমটা শেষ হল, সেখানে সিএবির চ্যালেঞ্জার ট্রফি খেলতে এসেছিল মুম্বইয়ের সূর্য। আর সেখানেও একটা দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আছে ওর। বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে বা ম্যাচ চলাকালীনও সূর্যকে কাছ থেকে দেখেছি। ছেলেটার মধ্যে যে জিনিসটা সবার আগে চোখে পড়ে, সেটা হল ওর আত্মবিশ্বাস। ভয়ডর বলে কোনও বস্তুই নেই ওর মধ্যে। বরং রয়েছে অসাধারণ পজিটিভ একটা অ্যাটিটিউড। ক্রিকেটের প্রতি ওর মনোভাবটাই হল, মাঠে নামো আর প্রথম বল থেকে বিপক্ষকে দাঁড়ানোর জায়গা দিও না। তরুণ এক ক্রিকেটারের ঠিক যে মনোভাব থাকা দরকার। ম্যাক্সওয়েলও যে মনোভাব নিয়ে মাঠে নামে।

ইন্টারনেটে আরও একটা তর্কের বিষয় আমার চোখে পড়ল। অনেকেই দেখলাম বলছেন, ২০১৫ বিশ্বকাপ ছিল ম্যাক্সওয়েলের আবির্ভাব-মঞ্চ। ২০১৯ বিশ্বকাপে নাকি সূর্যর মাধ্যমে ভারত দেখিয়ে দেবে, আমাদেরও একটা ম্যাক্সওয়েল আছে! এখনই অবশ্য অতটা বলার সময় আসেনি। পরের বিশ্বকাপের আগে তো আরও চার-চারটে আইপিএল প়ড়ে আছে। আগে দেখুন সেখানে সূর্য কেমন করে। তার পর না হয় এ সব ভাববেন। আর এই যে এত মাতামাতি হচ্ছে ছেলেটাকে নিয়ে, তাতে ফোকাস নষ্ট হয়ে যেতে পারে ওর।

সূর্যর মধ্যে ক্ষমতার অভাব নেই। এ ভাবেই খেলে যেতে পারলে ও অনেক দূর যাবে। কিন্তু এখনই এত তর্ক-বিতর্কে ওর মাথা ঘুরিয়ে না দিয়ে বরং আমাদের উচিত ওকে নিজের মতো করে বাড়তে দেওয়া।-আনন্দবাজার পত্রিকা

Next Post

Discussion about this post

নিউজ আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.