যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে দেশের কিছু মানুষ সমালোচনা করলেও বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। গত বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত বার্ষিক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
এসকে সিনহা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর বিচার বিদেশের সাহায্য না নিয়েই সফলভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। যদিও এ বিচার নিয়ে দেশে কিছু মানুষ সমালোচনা করছে, কিন্তু বিদেশের কাছে এ বিচার প্রক্রিয়া প্রসংশিত হচ্ছে। বিদেশি সাহায্য না নিয়েই আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে এটা দেখে বিদেশি বিচারকরা অবাক হচ্ছেন। অনেক দেশের বিচারক আমাকে বলেছেন তারা আমাদের দেশে এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। এতে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদেশি বিচারকরা।’
রাশিয়ার এক বিচারকের কথা উল্লেখ করে সিনহা বলেন, ‘একের পর এক যুদ্ধাপরাধীর বিচার হওয়াতে তিনি আনন্দিত। তিনি আমাদের দেশে আসবেন যুদ্ধাপরাধের বিচার দেখার জন্য।’
এ বিচার ব্যবস্থা আরো উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন আদালতে ৩১ লাখের বেশি মামলা নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমাণ আছে। এই মামলার জট কমাতে সরকার নানা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আদালত ডিজিটাল পদ্ধতিতে মামলার বাদী, বিবাদী ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করবে। বিচারক থেকে শুরু করে আদালতের পুরো কার্যক্রম থাকবে সার্ভারে। প্রয়োজনে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যখন তখন এটা দেখতে পারবেন। ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীও প্রতিটি জেলার বিচার কার্যক্রম তদারকি করবেন।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে অবস্থানরত সাক্ষীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের সাক্ষ্য প্রদান করতে পারবেন। তাদের জন্য আগামী মাস থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সাক্ষ্য প্রদান কার্যক্রম শুরু হরা হচ্ছে। আগামী মাসে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
নতুন আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘নবীনরা হতাশ হওয়া কিছু নেই। এই পেশায় আসার পর প্রথম ৫ বছর লেখাপড়া করতে হবে। তা হলে ভবিষ্যতে কাজে আসবে। আর যদি প্রথমেই টাকার কথা চিন্তা করেন তা হলে ভবিষ্যতে কিছুই করা যাবে না।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি মনে করে নবীন আইনজীবীরা আমাদের স্থান ধরে রাখবেন।’
নতুন আইনজীবীদের বরণ, আইনজীবীদের মেধাবী সন্তানদের এককালীন বৃত্তি প্রদান, অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেট আইনজীবী সমিতির সভাপতি একেএম সমিউল আলম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাটওয়ারী, মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা, অ্যাডভোকেট কায়মূল হক চৌধুরী প্রমুখ।
Discussion about this post