চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় মোবাইল চোর সন্দেহে এক যুবককে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের এসআই ইকবাল পারভেজ রায়হানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই উপ-পরিদর্শক ও তার বোনের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। মৃত যুবক এজাহার মিয়া (২৭) সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের বালুর রাস্তা এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে। এজাহার সীতাকুণ্ডে বিভিন্ন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, রায়হান খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা থানায় কর্মরত থাকলেও সম্প্রতি প্রেষণে তাকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) পদায়ন করা হয়েছে। তাদের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। সীতাকুণ্ডে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) তার বাবা চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তারা সীতাকুণ্ডে বসবাস করেন।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) নুরে আলম মিনা বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি, এসআই রায়হানের বোনের মোবাইল চুরি করেছে মর্মে এজাহার নামে এক যুবককে সন্দেহ করা হয়। এ সন্দেহের ভিত্তিতে এসআই রায়হান গেল সোমবার রাতে এজাহারকে তুলে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে সে ও তার বোনের স্বামী মিলে এজাহারকে মারধর করে। ভোরের দিকে অসুস্থ অবস্থায় এজাহার হাসপাতালে মারা গেছে। ঘটনা জানার পর আমরা প্রথমে রায়হানের বোনের স্বামীকে আটক করেছি। রায়হান প্রথমে পালিয়ে গিয়েছিল। বিভিন্নভাবে যোগাযোগের পর তাকেও আমরা হেফাজতে নিয়েছি।
এজাহারের স্বজনদের ভাষ্য, তিনদিন আগে বাসা থেকে রায়হানের বোনের মোবাইল চুরি হয়। রায়হান এই চুরির জন্য এজাহারকে সন্দেহ করেন। তিনি নিজে এজাহারের ঘরে গিয়ে মোবাইল ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। এজাহারের স্ত্রী পপি আক্তার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এসআই রায়হান ঘরে তল্লাশি করে তার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যায়। এ সময় এজাহারকে তার হাতে তুলে দিতে অথবা মোবাইল ফেরত দেওয়ার কথা বলেন রায়হান।
সোমবার রাত ১২টার দিকে এজাহার ঘরে ফিরলে তার শ্বশুর এস আই রায়হানকে খবর দেন। এসময় রায়হান এসে এজাহারকে তুলে নিয়ে যান। ভোরে একটি গাড়িতে করে এজাহারকে তার স্বজনদের কাছে নিয়ে যান রায়হান। স্বজনরা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এজাহারের শরীরে আঘাত ও জখমের চিহ্ন আছে বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা। পরে স্বজন ও এলাকাবাসী মিলে তার মরদেহ এনে ভাটিয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাখেন। এ ঘটনায় এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশের সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা এবং সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম শেখ।
Discussion about this post