বরগুনায় রবিউল আউয়াল (১১) হত্যা মামলার একমাত্র আসামি মিরাজকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে রবিউলের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুর ১২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু তাহের আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও মামলার বাদী-বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেন আদালত।
মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্টপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি আক্তারুজ্জামান বাহাদুর বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাচ্ছে রবিউলের পরিবার।
তিনি আরো জানান, রবিউলের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এ টাকা আসামি মিরাজের বাবাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থেকে আদায় করা হবে।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, যেখানে একজন সাক্ষীও আমার মক্কেলকে হত্যা করতে দেখেনি। সেখানে কী করে আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন তা বোধগম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করবো।
২০১৫ সালের ৩ আগস্ট রাতে মাছ ধরার জাল (স্থানীয় ভাষায় বুচনা) চুরির অভিযোগে বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ছোট আমখোলা গ্রামের রবিউলকে পিটিয়ে হত্যা করেন মিরাজ। পরে মৃতদেহ স্থানীয় লকরার খালে ফেলে দেন তিনি। পরদিন বিকেলে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ ওই খাল থেকে রবিউলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ৫ আগস্ট শিশুটির বাবা দুলাল মৃধা বাদী হয়ে তালতলী থানায় মিরাজকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই মিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ৬ আগস্ট আমতলীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় রবিউলকে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মিরাজ। পরে ২৫ আগস্ট প্রধান আসামি মিরাজকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
শিশু রবিউল স্থানীয় ফরাজি বাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। তার বড় বোন খাদিজা ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট বোন জান্নাতি সবে হাঁটতে শিখেছে। তালতলীর ফকিরহাট বাজারে রবিউলের বাবা দুলাল মৃধার খুচরা যন্ত্রাংশের ছোট্ট দোকানের আয় দিয়েই চলে তাদের সংসার।
Discussion about this post