একে.এম নাজিম, হাটহাজারী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ পবিত্র রমজানে মসজিদে তারাবী ও জামাতে শরীক হওয়া মুসল্লীদের জন্য সেবামূলক এক মহতি উদ্যোগ নিয়েছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী’র একটি সম্ভ্রান্ত পরিবার। আলহাজ্ব শাহ ইয়ার মোহাম্মদ (রাহ.)এর তিন কৃতিসন্তান জনাব মাওলানা কারী আবদুর রহমান, এম.এ. করীম শাহ ও এম.এ. রহীম শাহ মিলে একশত মসজিদে ওয়াটার কুলার ডিসপেন্সার, সিলিং ফ্যান, আইপিএস, ফ্রিজ ও চার্জার লাইটসহ প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মালামাল অনুদান হিসেবে দিচ্ছেন নামাজ আদায়রত মুসল্লীদের সেবার উদ্দেশ্যে।
গতকাল (বুধবার) বিকেল ৪টায় হাটহাজারী উপজেলার কাচারী সড়কস্থ কোর্ট মসজিদ চত্বরে উলামায়ে কেরাম, ইসলামী নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও মুসল্লীদের উপস্থিতিতে সেবামূলক এই অনুদান প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ শামসুল আলম। উপস্থিত ছিলেন, দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আহমদ দীদার, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা মুঈনুদ্দীর রুহী, আলহাজ্ব আহসান উল্লাহ মাস্টার, মাওলানা আলমগীর, মাওলানা হাবীবুল্লাহ নদভী, মাওলানা হোসাইন ফয়জী, মাওলানা জাহাঙ্গীর মেহেদী, মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুস প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা পবিত্র রমজানে তারাবীহ ও জামাতে শরীক হওয়া মুসল্লীদের জন্য সেবামূলক এই মহতী উদ্যোগ নেওয়ায় তিন ভাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রচন্ড গরম ও ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে জামাতে শরীক হওয়া মুসল্লীগণ খুবই কষ্ট অনুভব ও বিড়ম্বনার শিকার হয়ে থাকেন। এমএ রহীম শাহ এর প্রেরণায় হাটহাজারী’র কৃতি সন্তান আলহাজ্ব শাহ ইয়ার মোহাম্মদ (রাহ.)এর সুযোগ্য তিন সন্তান মিলে একশতটি মসজিদে মুসল্লীদের এই কষ্ট লাঘব ও পীপাসা নিবারণের জন্য ওয়াটার কুলার ডিসপেন্সার, সিলিং ফ্যান, আইপিএস, ফ্রিজ ও চার্জার লাইট দেওয়ার যে মহতী উদ্যোগ নিয়েছেন, নিঃসন্দেহে এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় সেবামূলক কাজ। এতে করে একদিকে মসজিদে নামায আদায়রত মুসল্লীগণ অনেক স্বস্তিবোধ করবেন এবং অন্যদিকে মসজিদের জামাতে শরীক হওয়ার জন্য সাধারণ মুসলমানদের মাধ্যে আরো অনেক মুসল্লীই উৎসাহবোধ করবেন। বক্তারা এ ধরণের ধর্মীয় সেবা ও উৎসাহমূলক কাজে সমাজের বিত্তশালীদেরকে অধিকহারে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইউরোপ-আমেরিকার খ্রীস্টানরা গরীব মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে কিছু সেবামূলক প্রকল্প পরিচালনা করে অনেককেই ঈমানহারা করছেন। আমাদের সমাজের বিত্তশালী মুসলমানরা যদি বিভিন্ন ধর্মীয় ও সেবামূলক কাজে শরীক হতেন, অনেক মুসলমানকে যেমন ধোঁকায় পড়ে ঈমানহারা হতে হতো না, তেমনি ইসলামের সুন্দর সংস্কৃতির বিকাশের ফলে সমাজ আরো সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়ে গড়ে ওঠতো। উদ্যোক্তা তিন ভাইয়ের পক্ষ থেকে এম.এ. রহীম বলেন, আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার ফলে নামায, রোযা ও ইবাদতরত মুসল্লীগণ যদি কিছুটা স্বস্তিবোধ করেন এবং সমাজের বিত্তশালীদের আরো অনেকেই ইসলামিক সেবামূলক কাজে শরীক হতে উৎসাহবোধ করেন, তবেই আমাদের এই প্রচেষ্টা সার্থক হবে। আমরা বিশ্বাস করি, মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতে আদায়কারী একজন মুসলমান সহজেই কোন অপরাধমূলক ও বিশৃঙ্খল কাজে জড়িত হতে পারেন না। আমাদের ক্ষুদ্র এই উদ্যোগ মুসল্লীদের খেদমত করার পাশাপাশি সাধারণ মুসলমানদেরকে মসজিদে অনুষ্ঠিত জামাতে শরীক হতে উৎসাহ যোগানোর চেষ্টা। যাতে করে আল্লাহর বিধান পালনের মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা কমে আরো বেশী সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরে আসে।
অনুষ্ঠান শেষে নির্বাচিত মসজিদসমূহের প্রতিনিধিদের হাতে যৌথভাবে উপহার সামগ্রী তুলে দেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ শামসুল আলম ও এম.এ. রহীম শাহ।
Discussion about this post