খুলনায় শিশু রাকিব হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্যদিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী ও বাদীপক্ষের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম জানান, রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই কাজী মোস্তাক আহমেদ, ময়না তদন্তকারী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) ফরেনসিক বিভাগের ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ এবং নগরীর টুটপাড়া মোড়ের গুডহেলথ ক্লিনিকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রভাত চন্দ্র গোলদার তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মামলার উভয় পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা অনুযায়ী আসামিদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও আত্মজিজ্ঞাসার জন্য ২৮ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গত ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটর্সে মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়া কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে শিশু রাকিবের মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত বায়ুর চাপে রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাকিবকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
শিশু রাকিবকে নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শরীফ ও মিন্টু মিয়াকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ক্ষুব্ধ জনতা। পরে শরীফের মা বিউটি বেগমকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পরদিন নিহত শিশুর বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনের নামে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ০৪)।
২৫ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী মোস্তাক আহমেদ এজাহারভুক্ত তিন আসামি মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক ওমর শরীফ, তার কথিত চাচা মিন্টু খান ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৬ সেপ্টেম্বর মহানগর আদালত বিচারকাজ শুরুর জন্য মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করেন।
এদিকে পৈশাচিকভাবে শিশু রাকিবকে হত্যার পর খুলনাসহ সারা দেশে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সামাজিক মাধ্যমে যা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বাইরে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এমনকি শিশুরাও প্রতিবাদ জানাতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ মিছিল, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
Discussion about this post