রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।
সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম সোমবার রয়টার্সকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জেনেশুনেই ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক অনিরাপদ করে রেখেছিলেন এবং তাতে হ্যাকাররা নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করতে পারে।
এ ঘটনায় জড়িতদের ‘শিগগির’ গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলা ও অসতর্কতার প্রমাণ তদন্তে উঠে আসার কথা গত বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন আরেকটি তদন্ত দলের প্রধান মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
গত ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির খবর প্রকাশের পর দেশ-বিদেশে তুমুল আলোচনার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির পাশাপাশি সিআইডিও তদন্তে নামে।
শাহ আলম বলেন, “বাংলাদেশে ব্যাংকের কয়েকজন কর্মী কিছু বিদেশির সঙ্গে যোগসাজশে ব্যাংকের সুইফট নেটওয়ার্ক অনিরাপদ করে রেখেছিলেন। কী করছিলেন তা তারা জানতেন।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্য পর্যায়ের কর্মকর্তারা কীভাবে হ্যাকারদের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন এবং এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলেন কি না তা এখন তদন্তকারীরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।
এই কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হবে কি না জানতে চাইলে রয়টার্সকে শাহ আলম বলেন, “আমরা এর খুব কাছাকাছি।”
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে সুইফট সিস্টেমে ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় দশ কোটি ডলার সরিয়ে নেয় হ্যাকাররা। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ফিলিপিন্সের রিজল কর্মশিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন- আরসিবিসির একটি শাখা হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়।
ওই অর্থ উত্তোলন এবং তা জুয়ার টেবিলে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আরসিবিসিকে দায়ী করেছেন ফরাসউদ্দিন।
ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এজন্য রিজল ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে। ওই জরিমানার অর্থ পরিশোধ করলেও বাংলাদেশের অর্থ ফেরত দিতে কিংবা দায় নিতে নারাজ আরসিবিসি।
এই চুরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘অবহেলা’র ওপর দায় চাপাচ্ছে তারা।
Discussion about this post