বিডি ল নিউজঃ চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল সোমবার (২১ মে) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের অধীন রিমঝিম পুলিশ টাউন ও ইটালিয়ান সিটির প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। একইসঙ্গে এই দুটি প্রকল্পের জন্য ভূমির যে পরিবর্তন করা হয়েছে তা আগের অবস্থানে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মরিয়ম খন্দকার। অপরদিকে রিমঝিম পুলিশ টাউনের পক্ষে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল ও ইটালিয়ান সিটির পক্ষে ছিলেন আব্দুল মতিন মণ্ডল। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
পরে তৈমূর আলম খন্দকার সাংবাদিকদের জানান, রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের কয়েকটি মৌজাভুক্ত এলাকায় রিমঝিম পুলিশ টাউন ও ইটালিয়ান সিটি এই দুটি প্রকল্প স্থানীয় কৃষি জমি জোর করে দখল করে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেসব সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনগণ পরিবেশ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তৈমূর আলম আরো বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বাদশাহ মিয়াসহ স্থানীয় পাঁচজন বাসিন্দা ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে নদী, খাল, ডোবা, কৃষিজমিসহ জমি রক্ষায় ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং দুটি প্রকল্পের জন্য ভূমির যে পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে তা পূ্র্বের অবস্থানে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে দুটি প্রকল্পের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।’
তৈমূর আলম আরো বলেন, ‘২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর হলফনামা আকারে প্রতিবেদন দাখিল করে। দাখিলকৃত প্রতিবেদনে এসব জমিকে নাল ও কৃষি জমি হিসেবে উল্লেখ করে বিস্তারিত শ্রেণিকরণ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, রিমঝিম পুলিশ টাউন ও ইটালিয়ান সিটি কর্তৃপক্ষ পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত ছাড়পত্র গ্রহণ করা ব্যতিরেকে কৃষি জমি ভরাট করে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ১২ (১) ধারা লঙ্ঘন করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ আদালত জারিকৃত রুল যথাযথ ঘোষণা করে এই রায় দেন।
Discussion about this post