রেলওয়ের সম্পত্তি চুরি বা অবৈধভাবে দখল করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য ওই ব্যক্তিকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ডের বিধান রেখে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) সকালে দশম জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনে রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল উদ্ধার) বিল, ২০১৬ উত্থাপন করেন রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক।
উত্থাপনের পর বিলে আপত্তি তুলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, কিছুদিন আগে এই সংসদে রেলওয়ে সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী গঠন, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা একটি আইন পাস হয়েছে। ওই আইনে সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষায় ইন বিল্ড কতগুলো ফরমুলা দেওয়া আছে। সেই ফরমুলার সঙ্গে যে বাহিনী করা হচ্ছে তার মধ্যে সাংঘর্ষিক কিছু বিষয় আছে।
তিনি বলেন, একই বাহিনী দুই আইন দ্বারা চলতে পারে না। আগের পাস হওয়া আইনে কাউকে গ্রেফতার করা হলে যে কেউ তাকে থানায় সোর্পদ করতে পারতো। আবার নতুন আজ যে আইন উত্থাপন করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যিনি গ্রেফতার করবেন তাকেই থানার ওসির (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এভাবে এক বাহিনী দুই আইন দ্বারা চলতে পারে না। এজন্য আমি স্পিকারের ভার্টিক এবং রুলিং চাই। নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আই স্ট্যান্ডিং দ্যা সিট (আমি দাঁড়িয়ে থাকতে চাই)।
এরপর ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া আপত্তিকারী ফখরুল ইমামকে বলেন, আপনার আপত্তির বিষয়ে মন্ত্রী ব্যাখা দেবেন, ব্যাখার পর ভোটে দেবো তারপর নিষ্পত্তি হবে। এরপর মন্ত্রী ব্যাখা প্রদান করলে তা, বিলটি পুনারায় ভোটে দিয়ে উত্থাপন করা হয়। বিলটি যাচাই বাছাই করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। কমিটিকে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীনে অপরাধ সংঘটন করতে সহায়তা করলে তাকে অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তি এই আইনে অপরাধ করলে তা প্রতীয়মান হলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
গত ২ মে মন্ত্রিসভায় বিলটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল উদ্ধার) আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল উদ্ধার) আইনটি মূলত ১৯৭৯ সালের। সামরিক শাসনামলের আইনগুলোকে বাংলায় ভাষান্তরের বাধ্যবাধকতা থাকায় এ আইনটি নতুন করে আনা হয়েছে। নতুন আইনে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
Discussion about this post