মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারহীনতার অবসানে রোম আইন (Rome Statute) এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতি বাংলাদেশ দ্ব্যর্থহীন সমর্থন প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত আইসিসির সদস্য দেশসমূহের ১৫তম সাধারণ অধিবেশনে ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশের এই সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন।
মো. শাহরিয়ার আলম আইসিসির এই অধিবেশনে অবহিত করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসানে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিচার পরিচালনা করছে। রোম আইনের নীতি-আদর্শের আলোকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আদালতে এই বিচার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রার সৃষ্টি করেছে।
যুদ্ধকালে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক অপরাধ প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রত্যয়ের কথা তুলে ধরে মো. শাহরিয়ার আলম আরও উল্লেখ করেন, এ ধরনের অপরাধকারীদের বিচারের সম্মুখীন, যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ তার অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সর্বদা প্রস্তুত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে নিগৃহীত ও অত্যাচারিত নারীদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
শাহরিয়ার আলম আন্তর্জাতিক আদালতের Trust Fund for Victims-এ বাংলাদেশের অবদানের কথা উল্লেখ করে অধিবেশনকে অবহিত করেন, পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় অপরাধের শিকার জনগোষ্ঠীর জীবনমানের পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ The Hague Working Group Facilitator for Victims-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আইসিসির অধিবেশনে ভৌগোলিক ও লিঙ্গভিত্তিক সমতা নিশ্চিতকরণেরও আহ্বান জানান এবং স্বল্পোন্নত দেশসমূহ থেকে ইন্টার্নশিপ ও পেশাগত প্রোগ্রামে আগতদের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রদানেরও আহ্বান জানান।
অধিবেশনে যোগদানের পাশাপাশি মো. শাহরিয়ার আলম আইসিসির প্রেসিডেন্ট, সাধারণ অধিবেশনের সভাপতি ও আইসিসির প্রসিকিউটরের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া তিনি আইসিসির প্রসিকিউটরের শিশুদের জন্য পলিসি পেপারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনেও যোগ দেন এবং শিশুদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধ প্রতিরোধে ও শিশুদের মঙ্গলে আইসিসির কৌশলগত ফ্রেমওয়ার্কের পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
Discussion about this post