আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নির্যাতনে জড়িত সেনা সদস্যদের কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে সাজা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইং। তবে কতজন সেনাসদস্য বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন বা কবে এই কোর্ট মার্শাল অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
নতুন একটি তদন্তে রোহিঙ্গা নির্যাতনে সেনা সদস্যদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
রবিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইং’র ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি সেনাবাহিনীর একটি আদালত রাখাইন অঞ্চলে অনুসন্ধান চালিয়েছে। সেখানে তারা একটি রোহিঙ্গা গ্রামে সামরিক অভিযানকালে ‘কিছু ক্ষেত্রে সেনা সদস্যরা নির্দেশ পালনে দুর্বলতা প্রদর্শন করেছে বলে প্রমাণ পেয়েছে।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র তুন তুন নি রয়টার্সকে জানান, সামরিক ওই তদন্তের তথ্য গোপনীয়। এ ব্যাপারে জানার অধিকার আমাদের নেই। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলে আরেকটি বিবৃতি দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে ২০১৮ সালে বার্তা সংস্থা এপি একটি প্রতিবেদনে জানায়, রাখাইনের গুতারপাইন গ্রামে পাঁচটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে সরকার সে সময় জানায়, ১৯ জন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছেন এবং তাদের মরদেহ ‘সচেতনভাবে সমাধিস্থ’ করা হয়েছে।
রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তাচৌকিতে ২০১৭ সালের আগস্টে হামলার পর পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাড়ে সাত লাখের বেশি মানুষ।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাখাইনের গুদার পিয়ান গ্রামে অন্তত পাঁচটি গণকবরের সন্ধান দেয়।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, সেনাসদস্য ও বৌদ্ধ গ্রামবাসীরা বন্দুক, ছুরি, রকেট লাঞ্চার ও গ্রেনেড নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালায়।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান, এই ঘটনায় শত শত মুসলিম সংখ্যালঘুকে হত্যা করা হয়। পরে মৃতদেহগুলো গণকবরে সমাহিত করা হয়।
তবে মিয়ানমার সরকার হামলার খবর অস্বীকার করে জানায়, গণকবরে পাওয়া মৃতদেহগুলো সন্ত্রাসীদের। ওই সময়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, প্রায় ৫০০ গ্রামবাসী তাদের ওপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং-এর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম রাখাইনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সামরিক আদালত।
Discussion about this post