রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নোয়ার্ট। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হবে কি না? উত্তরে হিদার নোয়ার্ট বলেন, ‘আমি জানি অন্য যে কোনও দেশের মতোই শরণার্থীদের গ্রহণে বাংলাদেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে।’
হিদার নোয়ার্ট বলেন, রাখাইনে জনগণের ওপর কি ঘটছে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সচেতন রয়েছে। সেখানে যা ঘটছে তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
মানবাধিকার লঙ্গনের জন্য মিয়ানমারের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি এ ব্যাপারে মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সংলাপ চালিয়েছে বলে জানান হিদার নোয়ার্ট।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও বার্মার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর মারাত্মক হামলার নিন্দা জানাই। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ওই বাহিনীর প্রতি আরও সহিংসতা প্রতিরোধের এবং স্থানীয় মানুষদের সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানাই।’
” onclick=”return false;” href=”http://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/800x0x1/uploads/media/2017/09/08/30bb8db7fed714d1fffc7467b35db490-59b2cb66409f8.jpg” title=”” id=”media_1″ class=”jw_media_holder media_image jwMediaContent aligncenter”>
হিদার নোয়ার্ট বলেন, ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে পালিয়ে আসা হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকদের সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে কাজ করছে।
রাখাইনে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, এমন কোনও কিছু করা থেকে বিরত থাকতেও সবার প্রতি আহ্বান জানান হিদার নোয়ার্ট। তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে জরুরি মানবিক সহায়তা দিতে দ্রুত তাদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ করে দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আহ্বান রইলো।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে মিয়ানমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স। মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের ব্যাপারে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, ‘আমার জানামতে এটি এমন একটি বিষয় যা আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’ তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি স্যান্ডার্স। অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, তারা চলমান পরিস্থিতিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং বিষয়টি মিয়ানমারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উত্থাপন করা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত ২৫ আগস্ট একটি নিরাপত্তা চৌকিতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) হামলার পর পরিপ্রেক্ষিতে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার খবর এবং ওই রাজ্যের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়সহ বেসামরিক জনগণের ওপর এর প্রভাব নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ খবরগুলোর মধ্যে রয়েছে— নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগ, পাশাপাশি এআরএসএ’র হামলা।’
” onclick=”return false;” href=”http://cdn.banglatribune.com/contents/cache/images/800x0x1/uploads/media/2017/09/08/6eb7b1f278cc0243b318f3567e661a36-59b2cc60bb35e.jpg” title=”” id=”media_2″ class=”jw_media_holder media_image jwMediaContent aligncenter”>
ওই কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন দূতাবাস নিবিড়ভাবে চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং রাখাইন রাজ্যে গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রবেশে কড়াকড়ি থাকায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেসব খবর উঠে আসছে, সেগুলো যাচাই করাটাও কঠিন।
এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখে চলেছি। এছাড়া দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায়েও আমরা প্রকাশ্যে ও ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলো ও সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ রেখে চলেছি।’
রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে মিয়ানমার সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এটা করতে গিয়ে যেন আইনের ব্যত্যয় না ঘটে, সেদিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা এই বিচারকাজ এমনভাবে পরিচালনর আহ্বান জানিয়েছে যেন এটি স্বচ্ছ হয় এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা দেয়। এছাড়া, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ভয়েস অব আমেরিকা।
Discussion about this post