লঞ্চ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ১৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট রাফসান আলভী ও ইশরাত হাসান। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, কামরুল হক সিদ্দিকী ও সুব্রত চৌধুরী।
আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ জনের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা অনুযায়ী নৌ-দুর্যোগ ট্রাস্টি বোর্ড নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন।
পরে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের দেওয়া ক্ষতিপূরণ অপ্রতুল দাবি করে ২০০৪ সালে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে নিহত ১২১ জনের পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করে ব্লাস্ট।
মামলায় নৌ-সচিব, সমুদ্র পরিবহন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটি-এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনসহ ২১ জনকে বিবাদী করা হয়।
২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সপ্তম যুগ্ম জেলা জজ আদালত সাক্ষী জেরার সময় বিবাদীদের পক্ষে কোনও আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় একতরফা শুনানি শেষে রায় দেন। ওই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ১৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।
পরে বিবাদীরা জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য আদালতে মামলাটি পুনুরুজ্জীবিত করার আবেদন জানান। আদালত এ আবেদন নামঞ্জুর করেন। নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএসহ বিবাদীরা ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন দায়ের করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় কেন বাতিল ও রদ করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার (৩১ মে) রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে ৮ জুলাই চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনায় এমবি নাসরিন-১ নামে একটি লঞ্চ ডুবে যায়। এতে ১১০ জন নিহত ও ১৯৯ জন নিখোঁজ হন। দুর্ঘটনায় লঞ্চটির মালিক এবং মাস্টারও নিহত হন।
Discussion about this post