বিডি ল নিউজঃ বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ‘লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে পুরনো ষড়যন্ত্রের জাল নতুন করে বুনতে শুরু করেছে এই অবৈধ সরকার। লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে নতুন একটি নাটক করে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের ষড়যন্ত্র করছে’। সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ ও সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে ফখরুল বলেন, ‘লতিফ সিদ্দিকী আদৌ কি দেশে ফিরেছেন? তাহলে তিনি এখন কোথায়, কি অবস্থায় আছেন? তিনি কি গ্রেফতার, নাকি মুক্ত? জনগণ এসব জানতে চায়। আমরা সরকারের কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করছি।’
লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করে ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে সরকার নতুন করে পুরনো ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে শুরু করেছে। তার দেশে ফেরার ঘটনাটি রহস্যেঘেরা। তার দেশে ফেরা নিয়ে সরকার নতুন নাটক তৈরি করে রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্যে একটাই। ধর্মপ্রাণ মানুষকে উস্কে দিয়ে দেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যাতে বাংলাদেশে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে- সেটি প্রমাণ করা যায়।’
বিএনপির মুখপাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি নিশা দেশাই বিসওয়ালের আগামী সপ্তাহে ঢাকা সফরের প্রতি ইংগিত করে বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, কোনো বিদেশী যখনই বাংলাদেশে আসেন, তার আগ মুহুর্তে দেশে এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, যাতে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে বলে প্রমাণ করা যায়। এই জঙ্গিবাদ কেবল এই সরকারই দমন করতে পারবে বলে বিদেশেীদের বুঝাতে চায়। সেজন্য এটা সাজানো নাটক কিনা এ নিয়ে এখন জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।’
আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দেশে ফেরা সর্ম্পকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘লতিফ সিদ্দিকীর দেশে ফেরার ছবি কোনো সাংবাদিক তুলতে পারেনি। তিনি আদৌও দেশে ফিরেছেন কিনা- তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে। কারণ তার বিরুদ্ধে অনেক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও কেন বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, কোন নির্বিঘেœ চলে যেতে দেয়া হলো- এটা রহস্যজনক।’
ফখরুল বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দেশে ফেরার বিষয়ে কোনো বক্তব্য আমরা পাইনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা না বলে ভিন্ন কথা বলেছেন যে একজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে হলে স্পিকারের অনুমতি প্রয়োজন হয়। অথচ গতকালই স্পিকার বলে দিয়েছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলে গ্রেপ্তার করতে বাধা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে বলতে চাই- জাতি আপনার কাছে জানতে চায়, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফিরেছেন কিনা। ফিরলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হলো না। আমরা আশা করব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অতি দ্রুত এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণের নানা রহস্যের অবসান ঘটাবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফেরার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করলে জনমনে প্রশ্ন ও ক্ষোভের সৃষ্টি হতো না। সরকারের এ হেন অবস্থানের কারণে আমরা মনে করছি, তারা মানুষের ক্ষোভকে উস্কে দিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা হাসিল করতে চায়।’
হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী দলের ডাকা হরতালের প্রতি সমর্থন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কাউকে কোনো সমর্থন জানাইনি। কোনো বক্তব্যও দেইনি।’
Discussion about this post