বর্তমান সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে লন্ডনে সাফাদির সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ।
সোমবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গণসংবর্ধনা প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন।
হানিফ বলেন, ‘খালেদা এখন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। তার যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মোসাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। আর ফখরুল সাহেব বললেন, ‘এটি ব্যক্তিগত ব্যাপার, তাতে দলের দায় নেই।’ ফখরুল সাহেবের কাছে জানতে চাই, মোসাদের কাছে আসলাম চৌধুরীর কী এমন ব্যক্তিগত ব্যাপার থাকতে পারে? ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের সঙ্গে গোটা মুসলিম জাহানের কোনো সম্পর্ক নেই, তারা মুসলিম জাহানের শত্রু। সেখানে আপনার নেতার মোসাদের সঙ্গে কী সম্পর্ক করেছে? আর আপনি বলবেন- আপনাদের দায় নেই, এমন বক্তব্য জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
আ.লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘ফখরুল সাহেব ভেবেছেন আসলামের উপর দোষ চাপিয়ে বেঁচে যাবেন, সেটি সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে মোসাদি ইসরায়েলের এক পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ব্রাদারহুড শাসন করছে। সেখানে অন্য ধর্মের লোকজন অত্যাচারিত হচ্ছে। সে কারণে সরকার পতন করতে তিনি বিএনপির শীর্ষ নেতা মিস্টার রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মিস্টার রহমানটা কে?’
‘ফখরুল সাহেব, মিস্টার রহমানটা হচ্ছে তারেক রহমান। লন্ডনে তার সঙ্গে বৈঠক করে তারেক রহমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতে সাফাদির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে আসলামের।’- বলেন হানিফ।
হানিফ আরো বলেন, ‘ভেবেছেন অপরাধ করে পার পেয়ে যাবেন, সে সুযোগ নেই। এর আগে তারেক রহমান আবুধাবিতে সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তখনও ফখরুল সাহেব বলেছিলেন- এটি ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু এসব বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।’
‘আইন-শৃংখলা বাহিনী আসলামকে ধরেছে। বিশ্বাস করি, তারা জেরা করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের যে নেতারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করবে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের হত্যা করে তারা (বিএনপি) ভেবেছিল সরকার পতন সম্ভব। কিন্তু সেটা হয়নি। পরে বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসী বাহিনী ও আনসারুল্লাহ বাহিনী গুপ্তহত্যা চালিয়ে বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির লোকদের খুন করে। এরপরও তারা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ আমাদের সরকারের বড় শক্তি জনগণ, সরকারের ভীত বাংলার জনগণের গভীরে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও স্থানীয় সাংসদ ইলিয়াস মোল্লা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন মেনদি সাফাদি। তবে সাফাদি ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ’র গুপ্তচর নন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে দাবি করছে ভারতীয় সূত্র।
Discussion about this post