হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় হাইকোর্টের একজন বিচারপতি হেফাজতের পক্ষে লিফলেট (প্রচারপত্র) বিতরণ করেছেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কী ভূমিকা ছিল? এ প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সভায় অতিথি হিসেবে ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী এই প্রশ্ন তোলেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহসভাপতি সুনীল সরকার, আইনবিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রমুখ।
শোকসভায় ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক যদি কোনো অসদাচরণ করেন, তাঁকে কীভাবে অপসারণ করা হবে, সেটা বাহাত্তরের সংবিধানে উল্লেখ ছিল। ১৯৭৭ সালে মার্শাল ল ফরমান (সামরিক আদেশ) দিয়ে পরিবর্তন করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু স্বগোত্রীয় একজন বিচারক হাইকোর্টে লিফলেট বিলি করে শপথ ভঙ্গ করেছিলেন। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, সেটাও জাতি জানতে চায়।’
ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘কোনো এক ব্যক্তির নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়নি বলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। একজন মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক হিসেবে, নাগরিক হিসেবে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সবিনয়ে বিরোধিতা করছি এবং করব। এই রায় এখন পাবলিক ডকুমেন্ট বা জনগণের সম্পত্তি। রায়ের ব্যাপারে বাংলাদেশের একজন নাগরিকের দ্বিমত থাকলে অবশ্যই এ বিষয়ে আলোচনা করার অধিকার রাখে।’
ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধান বিচারপতি বলেছেন সংযত আচরণ করতে। কিন্তু গত বুধ বা বৃহস্পতিবার আপনার চেম্বারে কারা গেছেন? কারা বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দাবি নিয়ে গেছেন? তাঁরা কি মামার বাড়ির আবদার নিয়ে গিয়েছিলেন?’
শোকসভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বাঙালি জাতির অধিকার প্রশ্নে আপস করেননি বলে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আমলে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। আপস করলে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। তিনি ভোগের নয়, ত্যাগের রাজনীতি শিখিয়ে দিয়ে গেছেন।
মেয়র নাছির উদ্দীন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করলে চলবে না। তিনি কীভাবে রাজনীতি করেছেন, সেটা জানতে হবে। সেটা জানতে হলে তাঁর আত্মজীবনী পড়তে হবে। তাঁকে হত্যার পর দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা থেমে যায়। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা আজ দেশকে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগে উন্নতি লাভ করত।
নগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ডিজিটাল যুগে অনলাইনে কোনো নেতা বা নেত্রীকে ছোট করা বা বড় করে তুলে ধরার দরকার নেই। নেতাদের আক্রমণ করে বক্তব্য রাখারও দরকার নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সবাইকে সংযত হতে হবে। রাস্তাঘাটে মারামারি করা যাবে না।
Discussion about this post