শরিয়তের অনুশাসন মেনে ‘বউ পেটানো’ যাবে। এ বক্তব্য সৌদি আরবের মনস্তত্ববিধ খালেদ আল-সাকাবির। দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি টেলিভিশন চ্যানেলে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে প্রয়োজনে ‘বউ পেটানো’র পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এ মনস্তত্ববিধ। বলেন ‘বউ পেটানো’র ইসলাম সম্মত নানা পদ্ধতিও।
কি কি কারণে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে আঘাত করতে পারবেন তাও সবিস্তারে ওই অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা করেন সৌদি মনস্তত্ববিধ খালেদ আল-সাকাবি।
তবে এ বক্তব্যে তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সমালোচনায় মুখর মানবাধিকার, নারীবাদী সংগঠনের কর্মীরা। প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে স্ত্রী নির্যাতনে মধ্যযুগীয় এ বক্তব্য সম্প্রচার করার অনুমতি দেয়া হলো কোন বিবেচনায়?
বক্তব্য সম্প্রচারের ক’দিনের মধ্যে বিষয়টিকে তুলে ধরেছে আমেরিকার মিডল ইস্ট মিডিয়া রিচার্জ ইনস্টিটিউটও। বিষ্ময় জানিয়েছে এ ধরনের বক্তব্যে।
বহুদিনের আইনি লড়াই শেষে বউকে ‘কাজের লোক’ নয়, পরমাত্মীয়া হিসেবে যখন সম্মান দিতে বলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তখন সৌদি আরবের সরকার নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে শরিয়ত মেনে ‘বউ পেটানো’র বক্তব্য প্রচার করল।
বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে সমালোচনার কোনো জবাব দেয়নি ওই টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। সৌদি সরকারের পক্ষেও এ নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই।
অনুষ্ঠানে খালেদ আল-সাকাবি বলেন, ‘স্ত্রীকে মারা যেতে পারে। তবে ইসলাম যে সব কারণে স্ত্রীকে মারার অনুমতি দেয়, শুধুমাত্র সেই সব কারণেই মারতে হবে।’
এ মনস্তত্ববিদের ব্যাখ্যা মতে, ‘আনুগত্য ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য একজন স্বামী তার স্ত্রীকে মারতে পারেন, নিজের রাগ কিংবা ক্রোধ প্রকাশ করার জন্য নয়।’
স্ত্রী মারধরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া বর্ণনা দিতে গিয়ে সাকাবি বলেন, ‘কোনো স্ত্রী যদি অবাধ্য হয় কিংবা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে প্রথমে স্বামী শাস্তি স্বরূপ বিছানায় স্ত্রীর দিকে পিঠ দিয়ে শয়ন করবে। এতে কাজ না হলে আলাদা কক্ষে শয়ন করবে।’
এরপরও স্ত্রী সংশোধন না হলে তখনই কেবল মারধরের বিষয়টি আসতে পারে বলে জানান সাকাবি। তবে শক্ত ও বড় কিছু দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করা যাবে না। সর্বোচ্চ মেসওয়াক কিংবা টুথ ব্রাশ দিয়ে স্ত্রীকে মারা যাবে বলে তিনি জানান।
সাকাবির যুক্তি, স্বামী যখন স্ত্রীকে মারবেন তখন এটা বোঝানোর জন্যই মারবেন যে স্বামীর সঙ্গে তিনি যে ব্যবহার করেছেন, তা ঠিক হয়নি।
Discussion about this post