ভেজাল ঘি বিক্রি করার ঘটনায় করা দুই মামলায় সাজা হওয়ার পর অসুস্থতা বিবেচনায় এবং জজ কোর্টে আপিল করার শর্তে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন নামজাদা সুপারশপ আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের একটি আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এর আগে দুপুরে নিরাপদ খাদ্য আইনের এই মামলার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন আদালতের বিচারক বিশেষ মহানগর হাকিম মো. মাহবুব সোবহানী দুই বছরের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
নয় বছর আগে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় আগোরার মালিক নিয়াজ রহিমকে পৃথক এক বছর করে দণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
একই আদালতের অপর বিচারক মেহেদী পাভেল সুইট বিবাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
আইনজীবী মো. সালাহউদ্দিন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, “রায়ের পরপরই আমরা বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তিনি খারিজ করে দেন। পরে একই আদালতের অপর বিচারক আমাদের মক্কেলের অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে জজ কোর্টে আপিল করার শর্তে জামিন দিয়েছেন।”
জামিন পাওয়ার পর নিয়াজ রহিম আদালত থেকে বাসায় চলে যান। তার আইনজীবী জানান, “আমরা যত দ্রুত সম্ভব আপিল করব।”
আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম ব্যবসায়ী গ্রুপ রহিম আফরোজ গ্রুপের একজন পরিচালক। এই গ্রুপের আরও কয়েকটি কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি। তবে আগোরার ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ এখন রয়েছে ইক্যুইটি ফান্ড ব্রামার অ্যান্ড পার্টনারস অ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশের হাতে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে আগোরার মগবাজার বিক্রয়কেন্দ্র থেকে ‘কুষ্টিয়ার স্পেশাল গাওয়া ঘি’ ও ‘স্পেশাল বাঘাবাড়ির ঘি’ জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে নমুনা পরীক্ষায় তাতে ভেজাল পাওয়া যায়।
ভেজাল ঘি বিক্রির অভিযোগে আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিমের বিরুদ্ধে ১৯৫৯ সালের নিরাপদ খাদ্য আইনে দুটি মামলা করেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের স্যানিটারি ইনস্পেক্টর ফখরুদ্দীন মোবারক। কুষ্টিয়ার ঘিয়ের উৎপাদক আবদুল কুদ্দুস এবং বাঘাবাড়ির ঘিয়ের উৎপাদক অনিল ঘোষকেও মামলায় আসামি করা হয়।
মামলার বাদী ফখরুদ্দীন মোবারক বলেন, মামলা হওয়ার পর আবদুল কুদ্দুস দোষ স্বীকার করে নেয়ায় ২০০৮ সালেই তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু নিয়াজ রহিম আপিল বিভাগ পর্যন্ত যান এবং বিফল হন। পরে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে দুই মামলার বিচার শুরু হয়।
দুই মামলায় নিয়াজ রহিমকে এ আইনের সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হলেও অনিল ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত।
দেশে নিত্যপণ্যের প্রথম চেইন সুপার শপ আগোরার যাত্রা শুরু হয় ২০০১ সালে। বর্তমানে ঢাকায় তাদের বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১৫টি।
Discussion about this post