বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি তদন্তে সরকার গঠিত কমিটি তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কাছে দাখিল করেছে। পরে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, শিগগিরই এই তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
সোমবার (৩০মে) অর্থমন্ত্রণালয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের সময় তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, তদন্ত কমিটির সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং সদস্য সচিব অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগেও সরকার যে সব তদন্ত কমিটি গঠন করেছে তার প্রতিটির প্রতিবেদনই জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়েছে। আমি প্রতিবেদনটি দেখব। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
তদন্ত দলের প্রধান ড. ফরাসউদ্দীন বলেন, ‘সুইফট কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না। সুইফটের মাধ্যমেই কাজের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সরকার। এছাড়া তদন্তকমিটি প্রতিটি সদস্যই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।’
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকারের তরফ থেকে ফরাসউদ্দিনের ওপর তদন্তের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয় গত ২০ মার্চ। তখন ৩০ দিনের মধ্যে অন্তবর্রতীকালীন ও ৭৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এরপর গত ২০ এপ্রিল অন্তবর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয়। ঘটনা জানার পরও বিষয়টি গোপন রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আনতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ফিলিপাইনের ব্যাংকো সেন্ট্রালের গভর্নর আমান্ডো টেটাংকো জুনিয়রের কাছে সহযোগিতা চেয়ে চিঠি লেখেন।
কিন্তু, দেশে তিনি এই ঘটনা চেপে যান। এরপর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের দৈনিক দি ফিলিপিন্স ডেইলি ইনকোয়ারারের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির খবর জানায়। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমেও এ খবর এলে তোলপাড় শুরু হয়।
পরে গত ৭ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা চুরির ঘটনা স্বীকার করে। এ ঘটনায় গত ১৫ মার্চ অজ্ঞাতদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা।
Discussion about this post