জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আআএস) বুধবার তাদের সামরিক কমান্ডার আবু ওমর আল শিশানির মৃত্যুর খবরের সত্যতা স্বীকার করেছে। যদিও গত তিন মাস আগেই তার মারা যাওয়ার খবর প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার আইএসের সংবাদ মাধ্যম আমাক জানিয়েছে, ইরাকের মসুল শহরের দক্ষিণ অংশে শিরকাত নামক এলাকায় এক লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন তাদের শীর্ষ নেতা শায়েখ ওমর আস শিশানি। তবে তারা ওই নেতার নিহত হওয়ার সময়কাল উল্লেখ করেনি।
এর আগে গত মার্চ মাসে মার্কিন নিরাপত্তা দপ্তর পেন্টাগন বলেছিল, উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় গুরুতর আহত শিরানি মারা গেছেন।
তবে শিশানি সম্পর্কে বুধবার আমাকে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আমাকের দেয়া ওই খবরের ওপর কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি পেন্টাগনও। তবে হিশাম আল হাশিমি নামের ইরাক সরকারের এক নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন, শিরকাতে আরো কয়েকজন জঙ্গির সঙ্গে নিহত হয়েছেন ওই আইএস কমান্ডার। আইএসের অধীনে থাকা ইরাকের বৃহত্তম নগরী মসুল উদ্ধারে তৎপর রয়েছে ইরাকি সেনারা। তারা ওই শহরটির দিকে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই তারা শিরকাতের অধিকাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে ব্রিটিশভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী সিরিয়ান অবজারভেটরি অব হিউমেন রাইটসের প্রধান রামি আবদেল রহমান জানিয়েছেন, শিশানি গত মার্চ মাসেই আহত হয়েছিলেন। পরে তিনি রাক্কার নিকটবর্তী এক গ্রামে মারা যান। তিনি রয়টার্সকে বলেন,‘আমি শিশানির এক চিকিৎসকের কাছ থেকে তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি।’ তবে তিনি মনে করছেন, তার উত্তরসূরী নির্বাচিত করার জন্যই আইএস তার মৃত্যুর খবরটি প্রকাশে এত দেরি করেছে।
লাল দাড়িওয়ালা শিশানির প্রকৃত নাম তারখান বাতিরাশভিলি। তবে তিনি ওমর দ্য চেচান নামেও পরিচিতি ছিলেন। জন্ম জর্জিয়ায়, ১৯৮৬ সালে। একসময় রুশ নিয়ন্ত্রিত চেচেনিয়ার স্বাধীনতার জন্য চেচেন বিদ্রোহীদের হয়ে লড়াই করেছেন। পরে জর্জিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ২০১২ সালে তিনি জর্জিয়া ছেড়ে সিরিয়ায় আসেন এবং এর পরের বছর আইএসে যোগ দেন। আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল এবং তিনি তার সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন। গতবছর এই জঙ্গি নেতাকে ধরিয়ে দেয়ার পুরস্কার হিসেবে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
সামরিক দক্ষতার কারণে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম বিশেষ করে পেন্টাগনের কাছে তিনি ‘মিনিস্টার অব ওয়্যার’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
Discussion about this post