সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতাসংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) বিষয়ে আইনগত পরামর্শের জন্য বৈঠকে বসেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আজ শনিবার (৪ নভেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এসে বৈঠক শুরু করেছেন আইনমন্ত্রী।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, তারা রিভিউয়ের আইনগত দিকে নিয়ে আলোচনা করবেন এবং কতদিনের মধ্যে রিভিউ করা হবে তা ঠিক করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজউদ্দিন ফকির ও মুরাদ রেজা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু, একরামুল হক টুটুল, সরদার রাশেদ, খন্দকার দিলিরুজ্জামান ও মাসুদ হাসান পরাগ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
৭৯৯ পৃষ্ঠার সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের বৃহৎ পরিসরে পর্যালোচনা ও রিভিউ করতে সহকর্মীদের নিয়ে ১১ সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। কমিটির সদস্যরা গত ১৫ অক্টোবর থেকে প্রতি কার্যদিবসে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পর্যালোচনা থেকে রিভিউ আবেদন তৈরির কাজ করছেন।
উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে ওই রায়ে এ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত করেছেন আপিল বিভাগ। বিশেষত রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে রিভিউয়ের আবেদন জানাবেন রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর গত ১১ অক্টোবর মাহবুবে আলম জানিয়েছিলেন, রায় হাতে আসার নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদনের নিয়ম। এ সময়ের মধ্যেই আবেদন জানানো হবে।
আর গত ২৩ অক্টোবর তিনি বলেন, ‘রায়ে একজন ছাড়া সবাই (আপিল বিভাগের বিচারপতিরা) আলাদা আলাদা মত দিয়েছেন। কাজেই বৃহৎ পরিসরের রায় পর্যালোচনা করছি। নিজেদের ভেতরে আলাপ-আলোচনা করছি। পয়েন্টগুলো প্রস্তুত করছি। কাজ শেষ হলে রিভিউ আবেদন দায়েরের প্রস্তুতি নেবো’।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন, ‘এ রায়ের বিষয়ে পড়া হচ্ছে। ভালোভাবে পড়ে, পরীক্ষা করে রিভিউ আবেদন জানানো হবে। এজন্য সময় লাগছে’।
গত ০১ আগস্ট সকালে ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়।
গত ০৩ জুলাই ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
ফলে মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছিল।
Discussion about this post