বাংলাদেশের পুলিশ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বৌদ্ধ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রধানকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে।
উশিত মং নামের এই ব্যক্তি গতকাল বুধবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা থেকে মিয়ানমার যাচ্ছিলেন, তখন তাকে আটক করা হয়।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্কে টানাপড়েনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটলো।
পুলিশ বলছে, গ্রেফতার হওয়া উশিত মং বাংলাদেশের নাগরিক। তবে তার স্ত্রী মিয়ানমারের নাগরিক এবং সেখানেই তিনি বসবাস করেন। তাঁরা দু’জনই রাখাইন বলে পুলিশ দাবি করছে।
ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর-ই আজম মিয়া জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি উশিত মং রাখাইন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিও পরিচালনা করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মি. মং পার্বত্য এলাকায় এবং কক্সবাজারে এই এনজিওর সেচ্ছাসেবীমূলক কর্মকাণ্ড থাকার কথা বললেও পুলিশ এখনও তার দৃশ্যমান কিছু প্রমাণ পায়নি।
তবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, উশিত মং-এর স্ত্রী মিয়ানমারেও এই এনজিও’র কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।
গ্রেফতারকৃত উশিত মং-এর বাড়ি ঝালকাঠি জেলায় বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে।
তবে উশিত মং পার্বত্য এলাকায় থাকতেন এবং মিয়ানমার যাওয়া আসা করতেন।
ঢাকায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছে।
কিন্তু তার বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগের ব্যাপারে মি. মং-এর কোন বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বিমান বন্দর থানা পুলিশের কর্মকর্তা নূর-ই আজম মিয়া বলেছেন, এই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে অতিরিক্ত মিয়ানমারের মুদ্রা এবং মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ একটি ল্যাপটপও পেয়েছে। সেই ল্যাপটপে উশিত মং এবং তার স্ত্রীর অস্ত্র নিয়ে কিছু ছবি রয়েছে।
এর সাথে কিছু তথ্য পুলিশ পেয়েছে। এগুলোকে ভিত্তি করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ধারণা করছে, এনজিও’র আড়ালে উশিত মং মূলত অবৈধ অস্ত্রের কেনাবেচা করেন।
পুলিশ সন্দেহ করছে, মিয়ানমারের আরাকানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে এই ব্যক্তি অর্থ সহায়তা করে এবং অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে।
এই বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।
গত ১৯শে অক্টোবর মিয়ানমার যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে এই উশিত মংকে র্যাব আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এরই মধ্যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আদালত থেকে তিনদিনের রিমান্ড পেয়েছে।
এখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
Discussion about this post