নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, কেউ আইন মানতে চায় না। যদি সবাই আইন মেনে চলে, তবে কোনও সমস্যা থাকে না। শুধু ট্রাফিক আইন নয়, সব পর্যায়ে সবাই আইন মেনে চললে অপরাধ অনেক কমবে। সব পর্যায়ে আইন মেনে চলার সংস্কৃতি চালু হোক, এটাই আমার চাওয়া।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে আয়োজিত ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
২১ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ চলবে। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বেলুন উড়িয়ে এই পক্ষের উদ্বোধন করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিবহন চালক ভাইদের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে একটা জটিলতা ছিল। সেটি নিয়ে গতকাল বুধবার রাতে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের দেওয়া দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য চালকদের একটা সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তারা তাদের লাইসেন্স ঠিক করে নেবেন।
আইন না মানা আমাদের সংস্কৃতি হয়ে গেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিবহন চালকদের ৯ দফা দাবি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ দাবিগুলোর মধ্যে কোথাও অসঙ্গতি থাকলে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।
মন্ত্রী বলেন, মহাসড়কে যারা বাস-ট্রাক চালায়, তাদের দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালাতে হয়। তাই তাদের নির্দিষ্ট সময় পর বিশ্রামের প্রয়োজন। একটা চালক আট ঘণ্টা গাড়ি চালানোর পর তাকে বাধ্যতামূলক বিশ্রাম নিতে হবে। মহসড়কে বিভিন্ন জায়গায় চালকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।
সড়কে আইন প্রয়োগ করতে গেলে পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকেই বড় হিসেবে পরিচয় দেয় এবং বদলির হুমকি দেয় উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, পুলিশের কেউ যদি সড়কে আইন প্রয়োগ করে তবে এর জন্য কোনও কর্মকর্তা বদলি হবেন না। আমি এটা আশ্বস্ত করছি। তবে সবার ব্যবহার বিনয়ী হতে হবে।
তিনি বলেন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে প্রধানত ইঞ্জিনিয়ারিং, এডুকেশন, এনফোর্সমেন্ট এই ট্রিপল ই বিবেচনায় রাখা হয়। এসব নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছাড়াও কয়েকটি সংস্থা কাজ করে। যেমন−সিটি করপোরেশন, রাজউক, বিআরটিএ। এর মধ্যে পুলিশ শুধু এনফোর্সমেন্ট দেখে। কিন্তু সড়কে কোনও সমস্যা হলেই সবাই ট্রাফিক পুলিশকে দোষারোপ করেন। একটা সিটির রাস্তা থাকা প্রয়োজন ২৫ শতাংশ। কিন্তু আমাদের আছে মাত্র ৮ শতাংশ। এটি আদর্শ একটি সিটির তিন ভাগের এক ভাগেরও কম। তবুও এটুকু সড়ক ব্যবহার করা হয় না।
তিনি বলেন, সড়কে সহাবস্থানে বাস বে না থাকলেও বাস থামার নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। কিন্তু চালকরা সেটা না মেনে বাস স্টপেজের আগে পরে থামে। এতে পথচারী ও যাত্রীদের সমস্যা হয়। এর জন্য সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। ট্রাফিক শৃঙ্খলা একটি সভ্য জাতির প্রতীক−এই স্লোগান নিয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যে ট্রাফিক সচেতনতামূলক পক্ষ শুরু করেছি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, একটি মহল নিরীহ পরিবহন শ্রমিকদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। পেঁয়াজ-লবণের পর গুজব পরিবহন সেক্টরে ভর করেছে। দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে তারা।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীও বলেছেন, নতুন আইনে কোনও সংশোধনী থাকলে তা দেখা হবে। আগামী জুন মাস পর্যন্ত যার যে লাইসেন্স আছে তাই দিয়ে যানবাহন চালাতে পারবেন। তবে অবৈধ কোনও লাইসেন্স পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
Discussion about this post