নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ছয়টি ধারাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা বলে আখ্যায়িত করেছে সম্পাদক পরিষদ।
অন্যদিকে ধারাগুলো পরবর্তিতে আলোচনার ভিত্তিতে সংশোধন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিন মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অন্যদিকে সম্পাদক পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ১২টি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক।
তারা হলেন- নিউজ টুডের রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, প্রথম আলোর মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম, যুগান্তরের সাইফুল আলম, নিউএজের নূরুল কবির, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এএইচএম মোয়াজ্জেম হোসেন, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, কালের কণ্ঠের ইমদাদুল হক মিলন, সংবাদের খন্দকার মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, ইনকিলাবের এএফএম বাহাউদ্দিন এবং বণিক বার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
সচিবালয়ে সরকারের তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তারা ধারাগুলো নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ যৌক্তিক। আলোচনার ভিত্তিতে আইনটি সংশোধন করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী ২২ এপ্রিল সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ আইন নিয়ে আলোচনার জন্য সম্পাদকদের নিয়ে বসার প্রস্তাব জানানো হবে।
গত ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
এ আইন কার্যকর হলে বিলুপ্ত হবে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা। তার বদলে এসব ধারার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে অপরাধের প্রকৃতি অনুযায়ী শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায়।
এ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ ও সংরক্ষণ করেন বা সহায়তা করেন, তা হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা। ২৫ লাখ টাকা জরিমানা।
এদিকে ৩২ ধারার মতো কঠোর বিধান যুক্ত করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ জানান সাংবাদিকরা।
এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারা নিয়ে গত ২৫ মার্চ উদ্বেগ জানান ১১ দেশের কূটনীতিকরা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা, ধর্ম অবমাননা, মানহানির মতো সাইবার অপরাধের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সাজার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল ও নিরাপত্তা এজেন্সি গঠনের কথা বলা হয়েছে।
Discussion about this post