নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার সদ্য বহিষ্কৃত ক্যাসিনো সম্রাট খ্যাত যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের শারীরিক কোনো জটিলতা নেই জানিয়ে তার চিকিৎসক সহযোগী অধ্যাপক মহসিন আহমেদ বলেছেন, আপনারা বলতে পারেন তার জীবনের কোনো ঝুঁকি নেই। নেই কোনো জটিলতা। কিন্তু, তার হার্টবিট অনিয়মিত রয়েছে; তার চিকিৎসা বাংলাদেশি করা সম্ভব; এই হাসপাতালেই করা সম্ভব।
আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সম্রাটের শারীরিক সর্বশেষ অবস্থা সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফ করেন মহসিন আহমেদ।
মহসিন আহমেদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার পরিচালক বলেছিলো উনি সুস্থ না; অবস্থা স্থিতিশীল। গতকাল থেকেই আমরা খেয়াল করছিলাম, তার হার্টের পার্সল অনিয়মিত ছিলো। আমাদের চিকিৎসকরা তাকে দেখার পর ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দিয়েছেন। আশা করি তাকে পর্যবেক্ষণ করে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বলতে পারবো; তিনি কেমন আছেন।
সম্রাটের অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফল ভাল রয়েছে জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, তার শারীরিক অবস্থা এখন বলা কঠিন। কারণ, এর আগে তার হার্টের বাল্ব রিপ্লেস করা হয়। আগে থেকে তার হার্টবিট অনিয়মিত ছিলো; তার হার্টবিট দুর্বল ছিলো।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কথা জানিয়েছেন সম্রাট। চিকিৎসক বলেন, গতকাল রাতে তিনি অভিযোগ করেন তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আমরা দেখলাম আসলেই তার হার্টবিট অনিয়মিত; আমরা ওষুধের ডজ বাড়িয়ে দিয়েছি। ২৪ ঘন্টা তাকে দেখার পর তার শারীরিক অবস্থার কথা বলা যাবে।
প্রসঙ্গত, আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকার জুয়াড়িদের কাছে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি রাজধানীতে ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে র্যাবের হাতে ধরা পড়েন সম্রাটের ডান হাত হিসেবে পরিচিত যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, রাজধানীর টেন্ডার কিং আরেক যুবলীগ নেতা জিকে শামীম। তারা গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাটের অবৈধ ক্যাসিনো সাম্রাজ্য নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। এরপর গা ঢাকা দেন যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
ক্যাসিনো চালানোর তথ্য প্রকাশের পর আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে রবিবার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ সভাপতি এনামুল হক আরমানকেও আটক করা হয়। দুইজনকে ঢাকায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব।
পরে রোববার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল সম্রাটকে নিয়ে কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে তালা ভেঙে তারই কার্যালয়ে ঢুকে অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত অভিযান চলে। সম্রাটের কাকরাইলের কার্যালয় থেকে একটি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া জব্দ করে তারা। বন্যপ্রাণীর চামড়া সংরক্ষণের দায়ে ছয় মাসের জেল দিয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া আটকের সময় মদ্যপ অবস্থায় থাকায় আরমানকেও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
Discussion about this post