রীনা পারভীন মিমি
আইন পেশা একটি সম্মান ও ঐতিহ্যের পেশা হিসেবে যুগ যুগ ধরে স্বীকৃত। আইনপেশাজীবীদের ‘কৌঁসুলি’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। সমাজের নানাবিধ অসংগতি ও বৈষম্য দূর করতে আইন পেশাজীবীদের রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা।
আইনজীবী হচ্ছেন স্বাধীন পেশার মানুষ। এই পেশাকে নিয়ে অনেকে স্বপ্ন দেখেন বড় কিছু হবার; সমাজের জন্য ভাল কিছু করার। তবে এই পেশায় প্রথমে এসে জুনিয়র আইনজীবীদের নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। এ পেশার শুরুতে একজন সিনিয়র আইনজীবীর কাছে প্রথম অবস্থায় একজন জুনিয়র অনেক আশা নিয়ে আসেন কিন্তু যখন সিনিয়রা জুনিয়রদের সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে জুনিয়রদের নানান রকম ভুল ব্যাখ্যা দেন; অনেক সময় ভুল পথে পরিচালিতও করেন। ফলে অনেক ভাল কাজ করার আশা নিয়ে আদালতে আসা জুনিয়ররা হতাশার গ্লানি নিয়ে অন্য পেশায় ধাবিত হন। পরবর্তীতে অনেকেই এই পেশাকে ঘৃণা করে কিংবা কাছের কেউ আইন পড়তে চাইলে অনুৎসাহিত করে।
আমার দেখা একটি অভিজ্ঞতা এখানে তুলে আনতে চাই, সদ্য আইন পাশ করা এক সহজ সরল জুনিয়র আইনজীবী স্থানীয় আদালতে আসলে তার সিনিয়র তাকে অ্যাডভোকেট লিখে কার্ড করে দিল, কারণ তার হাতে কিছু মামলা আছে এবং সে মামলা পায় তার পারিবারিক কারণে। অথচ বার কাউন্সিল থেকে সে আইনজীবী হিসেবে সনদ পায়নি। সিনিয়রের ভুল ব্যাখ্যায় সে সবাইকে কার্ড দেয়া শুরু করে, মামলাও গ্রহণ করে কিন্তু সে যখন বুঝতে পারে আইনজীবী নন কিন্তু আইনজীবী লিখে কার্ড বিতরণের ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে তখন কি তার সিনিয়রের প্রতি তার সম্মান থাকে?
এছাড়া নারী জুনিয়ররা নানান রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দিয়ে প্র্যাকটিসে টিকে থাকতে হয়, একজন নারী হিসেবে সে অভিজ্ঞতা আমি নিজেই। যাই হোক, সিনিয়রদের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে জুনিয়দের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ভুল পথে ঠেলে দিবেন না; আপনাদের একটু সহযোগিতা ফেলে অনেক জুনিয়র থেকে দেশে ভালো আইনবিদ তৈরি হতে পারে।
লেখক: আইনজীবী।
Discussion about this post