কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা:
সাংবাদিক সমিতির সভাপতিসহ নেতৃবৃন্দকে লাঞ্ছনা ও হুমকির প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (কুবিসাস)। বুধবার সকালে ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাঞ্ছনাকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে সাংবাদিকদের এ সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মানববন্ধন থেকে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য রবিবার পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়। বেধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিন সাংবাদিক নেতারা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়মের সংবাদ পরিবেশন করায় গত ১৭, ১৮ ও ১৯ মে বিভিন্নভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের লাঞ্ছিত করে সেকশন অফিসার জাকির হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল লতিফ এবং কম্পিউটার অপারেটর মনিরুজ্জামান তুষার। এক পর্যায়ে সেকশন অফিসার জাকির হোসেন বিশ^বিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের নামে খারাপ মহিলার সাথে সম্পর্ক জড়িয়ে উড়ো চিঠি বিতরণের হুমকি দেয়। ১৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর মনিরুজ্জামান তুষার মোবাইল ফোনে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রাসেল মাহমুদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং কিভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করে তা দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। ঐ ঘটনার প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ১৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করে সাংবাদিক সমিতি।
তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে প্রথম থেকেই কালক্ষেপন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনে নিরব ভূমিকার কারনে মঙ্গলবার এ মানববন্ধন করে সাংবাদিক সমিতি। মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে অংশ গ্রহন করে ‘থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’, আবৃত্তি সংগঠন ‘অনুপ্রাস’, রক্তদাতা সংগঠন ‘বন্ধু’ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ শফিউল্লাহর উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন থিয়েটার সভাপতি মহিউদ্দিন সজিব, বন্ধুর সভাপতি আইনুন নিশাত, অনুপ্রাসের পলাশ। মানববন্ধনে সাংবাদিক সমিতির অর্থসম্পাদক মোঃ মতিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মুসাইব ও সহ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ অন্যায়ের কোন বিচার করছে না। ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ, সেকশন অফিসার জাকির হোসেন, কম্পিউটার অপারেটর মনিরুজ্জামান তুষার বারবার অপরাধ করলেও প্রশাসন নিরব থেকেছে। সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের হুমকি দিয়েও তারা প্রশাসনের আশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে।’ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহী তার বক্তব্যে বলেন, ‘সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাদেরকেই যখন হুমকি প্রদান করা হয় এবং প্রশাসন নিরব ভূমিকা সত্যিই লজ্জ্বাজনক। অবিলম্বে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।’ ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘কোন সাধারণ শিক্ষার্থীর সাথেই কর্মকর্তারা এ রুপ ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু যেখানে সাংবাদিকরাই এর শিকার সেহেতু বিচার অনিবার্য।’ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মানববন্ধনে ২৪ জুলাই রবিবার পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দেন। এর সময়সীমার মধ্যে প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করে তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাবে সাংবাদিক সমিতি। মানববন্ধন শেষে সময়সীমার কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়াও স্মারকলিপির অনুলিপি প্রক্টর,ট্রেজারার, রেজিস্টার,ছাত্র উপদেষ্টা,শিক্ষক সমিতি,বঙ্গবন্ধু পরিষদ বরাবর প্রদান করা হয়।
Discussion about this post