নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানির সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী সময় প্রার্থনা করলে আদালত বলেন সাতখুনের মামলাগুলো ‘সেনসেশনাল মামলা’। এগুলোতে সময় দেয়া যাবে না।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিচারপতি জাঙ্গাহীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পরে আদালত সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর আগে সাতখুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত কৌসুলী নিয়োগের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল। আদেশ দেয়ার পূর্বে জামাল উদ্দিন নামে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক আদালতকে বলেন, জামাল উদ্দিন রায় ঘোষণার সময় পলাতক ছিলেন। পরে তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এখন তিনি কারাগার থেকে বিলম্ব মার্জনা সহকারে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেছেন। ওই আপিলটি হাইকোর্টে বিচারাধীন। অতএব, এই আবেদনের উপর আদেশ না দেয়া পর্যন্ত তার রাষ্ট্রনিযুক্ত কৌসুলীর বিষয়ে এই আদালতের আদেশ দেয়া ঠিক হবে না। এরপর তিনি সময় প্রার্থনা করেন।
জবাবে আদালত বলেন, এ মামলাগুলো চাঞ্চল্যকর। সময় দেয়া যাবে না। এ পর্যায়ে আদালত রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহিরের বক্তব্য জানতে চায়।
জহিরুল হক জহির সুনির্দিষ্ট করে বক্তব্য না দেয়ায় আদালত বলেন, আপনাকে বিষয়টি পরিস্কার করতে হবে। আমরা কি তাকে সময় দেব? এরপর আদালত সোমবার পর্যন্ত আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন এবং ওই দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামাল উদ্দিনের বিলম্ব মার্জনার দরখাস্ত হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছেন কি না সে বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে তার আইনজীবীকে বলেন। ওই দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যান্য পলাতক আসামিদের পক্ষেও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে আদেশ দেবে আদালত।
আসামিপক্ষে এডভোকেট এস এম শাজাহান ও এম আমিনুল উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। এরপর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে সাতটি লাশ। নিহত অন্য ব্যক্তিরা হলেন- নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
এর আগে ৭ মে সাত খুন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের পেপারবুক (মামলার সারসংক্ষেপ) সরকারি ছাপাখানা থেকে হাইকোর্টে এসে পৌঁছায় । সেইদিন হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) মো. সাব্বির ফয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, পেপারবুক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রস্তুত হয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছেছে। প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিলে কার্যতালিকায় আসবে।
গত ১৬ জানুয়ারি সাত খুন মামলায় ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ২৩ জন।
Discussion about this post