ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হবে আজ। যশোরের স্পেশাল জজ আদালতে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হবে। মামলার ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেছেন আদালত।
মসিউর রহমানের দুর্নীতির মামলাটি ঝিনাইদহে ব্যাপক আলোচিত ঘটনা। মামলাটি নষ্ট করতে ব্যাপক তৎপর ছিলেন আসামি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন দুদকের পিপি।
জানতে চাইলে দুদক যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কিন্তু আসামির নানা অপতৎপরতার কারণে মামলাটির বিচার কাজ দীর্ঘায়িত হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আজ সোমবার মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হবে। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবেন।
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন মৃধা মামলা দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে মো. মসিউর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন।
২০০৯ সালের শেষের দিকে ঝিনাইদহ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত মামলাটি আমলে নেন। আমলযোগ্য মামলাটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রসিডিং কোয়াশমেন্টের জন্য আবেদন করেন মো. মসিউর রহমান। এরপর ২০১০ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করেন। চার বছর পর ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল উচ্চ আদালত আসামির মোকদ্দমা খারিজ করে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। একইসঙ্গে স্পেশাল জজ আদালত যশোরকে মামলার কার্যক্রম আইন অনুযায়ী পরিচালনার নির্দেশ দেন।
এরপর আসামি পক্ষের বিভিন্ন সময়ের আবেদনের পরপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে লিভ টু আপিল দাখিল করেন আসামি। পরে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে গেলে আবার সুপ্রিমকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন।
রিভিউ পিটিশন খারিজ হলে বিচার কাজ শুরু হয়। পুনরায় আয়কর আইনের বিরুদ্ধে ৪৩৩৭/১৬ রিট পিটিশন দাখিল করেছেন উচ্চ আদালতে। সেখানে এ মামলার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মামলাটির অচিরেই রায় ঘোষণা হবে বলে আশাবাদী দুদকের আইনজীবী।
Discussion about this post